২ কোটি টাকায় হাসপাতাল সংস্কার, কাজ শেষের আগেই ফাটল

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক ঈশ্বরদী (পাবনা)
প্রকাশিত: ০৫:৪৩ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০১৯

একশ বছরের পুরনো হাসপাতাল ভবন নতুনভাবে নির্মাণ না করে সংস্কারের নামে প্রায় দুই কোটি টাকা অপচয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী রেলওয়ে হাসপাতাল ভবন সংস্কারে প্রায় দুই কোটি টাকা খরচ করার বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

সংস্কারকাজের মান নিয়ে রয়েছে অভিযোগ। কারণ এরই মধ্যে ভবনটির অনেক স্থানে পলেস্তারায় ফাটল দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, এ টাকায় নতুন ভবনই করা যেত। পুরনো হাসপাতাল ভবন দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না করায় কোথাও চুনকাম বা কোথাও পলেস্তারা উঠে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ভবনে চিকিৎসক, নার্সদের কক্ষ, অস্ত্রোপচার কক্ষ, ড্রেসিং রুম, দুটি ওয়ার্ড (পুরুষ ও নারী) মিলিয়ে ছোট-বড় ২৩টি কক্ষ রয়েছে। ভবনটি সংস্কারের জন্য গত বছরের মাঝামাঝি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলীর দফতর থেকে এক কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় ধরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজ পান পাবনার স্থানীয় ঠিকাদার আনোয়ারুল আলম বাবু। হাসপাতালটি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণ ও রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় অফিস স্থাপনের পর রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৯৬০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত হাসপাতালটি জমজমাট ছিল। এখানে সব সময় রোগী ভর্তি থাকতো। কিন্তু ধীরে ধীরে এর ঐতিহ্য হারিয়ে যায়।

হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পুরনো হাসপাতাল ভবনের দেয়ালের পলেস্তারা, চুনকাম, রং দেয়া ও টাইলস লাগানোর কাজ হয়েছে। সম্প্রতি কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। কিন্তু স্থানে স্থানে পলেস্তারায় ফাটল দেখা দিয়েছে। সংস্কারে তেমন ফল হয়নি। প্রায় আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে হাসপাতাল ভবন। সংস্কারকাজের টাকায় ভালো মানের নতুন একটি ভবনই করা যেতো।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিএন-২) হাবিবুর রহমান বলেন, সংস্কারকাজ সম্ভবত শেষ হয়েছে। কিন্তু বিল এখনও কিছু বাকি আছে। তবে কী পরিমাণ বাকি আছে বলতে পারব না। সংস্কারকাজে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা সেটিও বলতে পারব না।

তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলী বলেন, ঠিকাদার কিভাবে কাজ করেছে, সেটি বলতে পারব না। কারণ আমি চলে আসার পরে বেশির ভাগ কাজ হয়েছে। তাই অনিয়ম হয়েছে কিনা জানা নেই। তবে টেন্ডারে কোনো অনিয়ম হয়নি বা অর্থ লুটের আশায় এটি করা হয়নি।

সদ্যবিদায়ী প্রধান প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, একতলা ভবন সংস্কারের জন্য এত টাকা ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু যেহেতু কাজটি টেন্ডারের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে, কাজেই সেটি আমাদের বাস্তবায়ন করতে হয়েছে। সংস্কারে কোনো অনিয়ম হয়নি।

জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আনোয়ারুল আলম বাবু বলেন, টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সংস্কারকাজ সম্পন্ন করেছি।

আলাউদ্দিন আহমেদ/এএম/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।