২ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ১০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০৮:৪২ এএম, ২০ আগস্ট ২০১৯

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দুর্গাপুর আর শৈলকুপা উপজেলার পিড়াগাতি গ্রামের মাঝের দুই কিলোমিটার রাস্তা ভেঙেচুরে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ভাঙা ওই স্থান দিয়ে ভ্যান-রিকশা ছাড়া কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না।

স্থানীয়রা বলছেন, সামান্য এই রাস্তাটির জন্য শৈলকুপা উপজেলার শেষ প্রান্তের মানুষগুলোর ঝিনাইদহ শহরে আসতে হয় ৩০ কিলোমিটার ঘুরে। দুই পাশে ৩২ কিলোমিটার পিচঢালা রাস্তা থাকলেও মাঝের এই দুই কিলোমিটার চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে এলজিইডি দফতরে একাধিকবার চেষ্টা করেও রাস্তা সংস্কারের কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি। ফলে পার্শ্ববর্তী কমপক্ষে ১০টি গ্রামের মানুষকে কষ্ট করেই চলাচল করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের ঝিনাইদহ অংশের পাঁচমাইল নামক স্থান থেকে উত্তর দিকে আরেকটি পিচঢালা রাস্তা চলে গেছে। এই রাস্তাটি ঝিনাইদহের বিজয়পুর, দুর্গাপুর, শৈলকুপার পিড়াগাতি, ফাদিলপুর হয়ে শৈলকুপা শহরে পৌঁছেছে। শৈলকুপা শহর থেকে ফাদিলপুর হয়ে পিড়াগাতি গ্রাম পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার পিচঢালা রাস্তা রয়েছে। আর দুর্গাপুর থেকে ঝিনাইদহ শহর পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার রাস্তাও পিচঢালা। কিন্তু দুর্গাপুর ও পিড়াগাতি গ্রামের মাঝে দুই কিলোমিটার রয়েছে ভাঙাচোরা। সেখানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এই গর্ত পেরিয়ে ভ্যান-রিকশা কষ্ট করে চলছে। কিন্তু বড় কোনো যানবাহন চলাচলের কোনো সুযোগ নেই।

দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা সাগর হোসেন জানান, রাস্তাটি ১৪ থেকে ১৫ বছর আগে সংস্কার হয়েছিল। সেই সময় পিচঢালা রাস্তা তৈরি করা হয়। এরপর ঝিনাইদহ অফিসের পক্ষ থেকে দুর্গাপুর গ্রামের বসতি এলাকার শেষ পর্যন্ত আর শৈলকুপা অফিসের পক্ষ থেকে পিড়াগাতি গ্রামের বসতি এলাকার শেষ পর্যন্ত মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু উভয় অংশে মাঠের মাঝের দুই কিলোমিটার কেউ মেরামত করেনি। ফলে ওই দুই কিলোমিটার ভেঙেচুরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

তিনি জানান, ওই স্থানটি এতটাই ভেঙেচুরে গেছে যে সেখানে তৈরি হওয়া গর্ত পেরিয়ে চলাচল সম্ভব নয়। ছোট ছোট যানবাহনগুলো টেনে উঠাতে হয়। আর বড় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

শৈলকুপা উপজেলার পিড়াগাতি গ্রামের আমিনুর রহমান জানান, ফাদিলপুর বাজারটি শৈলকুপা উপজেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত। এটি একটি বড় বাজার।

এই বাজারের দোকানিরা অভিযোগ করেন, এই সামান্য রাস্তাটির জন্য তারা ঝিনাইদহ শহরে মোকাম করতে পারছেন না। যারা করছেন তাদেরও শৈলকুপা শহর হয়ে ঝিনাইদহ যেতে হচ্ছে। এতে তাদের অতিরিক্ত ৩০ কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে। তারা দুর্গাপুর হয়ে ঝিনাইদহ গেলে মাত্র ১৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই যেতে পারে। এছাড়া তাদের এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্যও সহজে বাজারজাত করতে পারছেন না মাত্র দুই কিলোমিটার রাস্তার জন্য। এ বিষয়ে তারা একাধিকবার ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু রাস্তাটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।

ওই সড়কে চলাচলকারী ভ্যানচালক মিজানুর রহমান জানান, এ রাস্তায় তারা কষ্ট করেই চলাচল করছেন। ভাঙাচোরা স্থানে এসে অনেক সময় যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হয়। এরপর ভ্যানটি টেনে তুলে ভাঙা স্থান পার হতে হয়। দূরত্ব কম হওয়ায় তারা কষ্ট করেই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন।

এ বিষয়ে এলজিইডির ঝিনাইদহ অফিসের প্রকৌশলী ফয়সাল আহম্মেদ জানান, এই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য তারা কয়েক দফা উচ্চপর্যায়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও বরাদ্দ পাননি। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত রাস্তা মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/আরএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।