ধর্ষণে প্রেমিকা অন্তঃসত্ত্বা, প্রেমিকের যাবজ্জীবন
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পূর্ব ডুমুরিয়া এলাকার এক তরুণীকে (১৯) ধর্ষণের দায়ে আফজাল বেপারী নামে (২১) এক যুবকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও ধর্ষণে জন্ম নেয়া শিশুর ২১ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ভরণপোষণের ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে বহন করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে শিশুটির ভরণপোষণ নির্ধারণ করে তা দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির অর্জিত সম্পদ থেকে আদায়ের জন্য রাষ্ট্রকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি শিশুটি তার মা অথবা বাবা কিংবা উভয়ের পরিচয়ে পরিচিত হওয়ার অধিকার রাখে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ এ রায় দেন। এ সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আফজাল বেপারী আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আফজাল বেপারী গৌরনদী উপজেলার পূর্ব ডুমুরিয়া এলাকার কামাল বেপারীর ছেলে। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী আফজাল বেপারীর প্রতিবেশী। ধর্ষণে জন্ম নেয়া শিশু ফাহিমের বয়স বর্তমানে আট বছর।
বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) মো. আজিবর রহমান মামলার রায়ের বরাত দিয়ে জানান, আফজাল এবং ওই তরুণীর বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন আফজাল। এতে ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। বিষয়টি ওই তরুণী আফজালকে জানিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। তবে আফজাল তালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে ওই তরুণীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে আফজাল। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ ঘটনায় সালিশ-মীমাংসায় ব্যর্থ হলে আফজালের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ২১ জানুয়ারি মামলা করেন ওই তরুণী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গৌরনদী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম মৃধা ২০১০ সালের ৩ মার্চ আফজালকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আজ এ রায় দেন।
সাইফ আমীন/আরএআর/জেআইএম