ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন তারা

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক বেনাপোল
প্রকাশিত: ০২:০৩ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০১৯

কলকাতায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ রোববার সকাল ৯টায় বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে আনা হয়। বেনাপোল চেকপোস্টে লাশ আসার পর স্বজনদের আহাজারিতে গোটা এলাকা ভারি হয়ে ওঠে। এ সময় চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি অনেকেই। কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সেরে মাইক্রোবাসে করে নিথর দেহ দুটি নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেন স্বজনরা।

লাশ হস্তান্তরের সময় চেকপোস্টের নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় ভারতীয় বিএসএফ, পুলিশ, কাস্টমস ও বাংলাদেশি ইমিগ্রেশন পুলিশ, বিএসএফ ও কাস্টমসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিহত দুই বাংলাদেশি হলেন- ঝিনাইদাহ জেলার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে কাজি মোহাম্মাদ মঈনুল আলম (৩৬) ও কুষ্টিয়া জেলার খোকসা থানার চান্দুর গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে ফারহানা ইসলাম তানিয়া (৩০)।

নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ফারহানা ইসলাম ঢাকায় সিটি ব্যাংকে ও মঈনুল ইসলাম ঢাকায় গ্রামীণ ফোনে চাকরি করতেন। গত ১৫ দিন আগে তারা ভারতে চিকিৎসার উদ্দেশে গিয়েছিলেন।

ভারতে তাদের সঙ্গে যাওয়া কাজী সাফি রহমত উল্লাহ জানান, আমরা তিনজনই দাঁড়িয়ে ছিলাম শেক্সপিয়ার স্মরণী রোডে। এমন সময় আকস্মিক জাগুয়ার নামে একটি জিপ সজোরে পাশের রাস্তায় উঠে পড়ে ফারহানা ও মঈনুলকে চাপা দেয়। পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

ফারহানার লাশ বেনাপোল চেকপোস্টে গ্রহণ করেন তার চাচাতো ভাই আবু ওবাইদা সাফিন আর মঈনুল আলমের লাশ গ্রহণ করেন তার চাচাতো ভাই জিয়াদ আলী।

Benapole-(1).jpg

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ওসি (তদন্ত) মাসুম বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভারতে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ভাইয়ের এমন মৃত্যু এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না মইনুলের বড় ভাই কাজি মোহাম্মদ সাইফুল আলম। কান্নাভেজা গলায় তিনি বলেন, ভাবতেই পারছি না এমনটা হয়েছে। পরশু রাতেই কথা হয়েছিল। আমি ঝিনাইদহে আছি। বাবা-মা এখনও কিছুই জানেন না।

সাইফুল জানান, ফারহানা তার ভাইয়ের বন্ধু ছিলেন। মইনুলের স্ত্রী এবং ৪ বছরে ছেলে আছে। চিকিৎসার প্রয়োজনে জিয়াদ এবং ফারহানাকে নিয়ে মইনুল গত ১৪ তারিখ ভারতে আসেন। উঠেছিলেন মির্জা গালিব স্ট্রিটের একটি হোটেলে। ১৫ আগস্ট রাতে মইনুলের সঙ্গে শেষ কথা হয় সাইফুলের।

তিনি বলেন, কলকাতায় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চোখ দেখাতে গিয়েছিলেন মইনুল। এবারের কলকাতা যাত্রা ছিল রুটিন চেকআপের জন্য।

কলকাতার সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, শেক্সপিয়ার স্মরণী ও লাউডন স্ট্রিটের সংযোগস্থলে শুক্রবার গভীর রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জাগোয়ার নামের একটি দ্রুতগামী গাড়ি শেক্সপিয়ার স্মরণী ধরে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের দিক থেকে কলামন্দিরের দিকে যাওয়ার সময় ধাক্কা দেয় একটি মার্সিডিজকে। এরপর জাগুয়ারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুই পথচারীকে পিষে দেয়। গুরুতর আহত ওই দুইজনকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

ভারতীয় পুলিশ জানায়, তারা দু’জন গত ১৫ দিন যাবৎ চিকিৎসা করাতে কলকাতায় মির্জা গালিব স্ট্রিটের একটি হোটেলে উঠেছিলেন।

জামাল হোসেন/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।