একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু, বেঁচে যাওয়া শিশুটি আইসিইউতে
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বাস প্রাইভেটকার সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের মৃত্যুর পর চলে গেলেন শ্যালকও। পরিবারের একমাত্র বেঁচে যাওয়া তিন বছরের শিশুপুত্র নাহিদ ইসলামকে মুমূর্ষু অবস্থায় পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। আর প্রাইভেটকার চালক সেলিম ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতরা হলেন, নরসিংদীর মাধবদি বাংলা টেক্সটাইলের মালিক রফিকুল ইসলাম (৪৫), তার স্ত্রী শামসুন্নাহার শাহানা (৩৫), কলেজ পড়ুয়া ছেলে নাবিল ইসলাম (১৮), মেয়ে রওনক জাহান (১৩) ও শ্যালক আশরাফুল ইসলাম।
নিহতদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার দূর্গাপুর উপজেলার শাখাইচন্ডীগড় গ্রামে। আর নিহত আশরাফুল ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। স্বপরিবারে বসবাস করতো নরসিংদী জেলার মাধবদিতে। তারা স্বপরিবারে ঈদের ছুটিতে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর শ্বশুরবাড়ি এসেছিল। আজ মধুপুর থেকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল যাচ্ছিল ভাইয়ের বাড়িতে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানায়, রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন ঈদের ছুটি শেষে নিজের প্রাইভেটকারে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর শুশুরবাড়ি এসেছিল। আজ মধুপুর থেকে টাঙ্গাইলে ঘাটাইল যাওয়ার পথে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর নামকস্থানে পৌঁছলে কিশোরগঞ্জগামী এমকে পরিবহনের দ্রুতগতির একটি বাস ওভারটেক করার সময় চাপা দেয়। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শামসুন্নাহার শাহানা মারা যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থল পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুরুত্বর আহত অবস্থায় রফিকুল ইসলাম, তার ছেলে নাবিল ইসলাম, নাহিদ ইসলাম, কন্যা রওনক জাহান, শ্যালক আশরাফুল ইসলাম এবং প্রাইভেটকার চালক সেলিমকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম, নাবিল ইসলাম ও মেয়ে রওনক জাহানকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের একমাত্র বেঁচে যাওয়া তিন বছরের শিশুপুত্র নাহিদ মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আহত অপর দুইজন আশরাফুল ও চালক সেলিমকে ৭নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে আশরাফুল মারা যায়।
হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন শিশু নাহিদের অবস্থার অবনতি হলে বিকেল ৫টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গৌরীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিয়া জানান, পুলিশ বাসটি আটক করেছে তবে চালক পালিয়ে গেছে।
রকিবুল হাসান রুবেল/এমএএস/পিআর