চিকিৎসকের ভুলে জন্মের পরই মাকে হারাল নবজাতক
সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্মের মাত্র দু’দিনের মাথায় ‘ভুল চিকিৎসায়’ রুবিনা বেগম (২৬) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। তিনি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নরশিংপুর গ্রামের আল আমিনের স্ত্রী।
এদিকে তদন্তের আগে ‘ভুল চিকিৎসায়’ মারা যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করতে রাজি নন ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্বামী আল আমিন জানান, গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে প্রসব বেদনা নিয়ে ওসমানী হাসপাতালে গাইনি বিভাগের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন রুবিনা। রোগীর অবস্থা বিবেচনায় ওই দিন বিকেল ৪ টায় তার অস্ত্রপচার করেন চিকিৎসকরা। এরপর পোস্ট অপারেটিভ সেন্টারে নেয়ার ঘণ্টা খানেক পর রুবিনার জ্ঞান ফেরে। বাচ্চাকে কাছে দেয়া হলে তিনি সুস্থ হিসেবেই মেয়েকে বুকের দুধ পান করান। পুরো রাত কাটে এভাবেই।
তিনি বলেন, এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসকরা রোগীর স্বজনদের জানান যে, আগের অপারেশনে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে, আবার অপারেশন লাগবে। কথা অনুযায়ী বেলা ১১টায় রুবিনাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ে অস্ত্রপচার শেষে অবস্থার অবনতি হলে তাকে জরুরি ভিত্তিতে ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়া হয়। সারাদিন কোনো স্বজনকে তাকে দেোর অনুমতি দেয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, রাত ১১টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে ডেকে নিয়ে বলেন স্ত্রীর অবস্থা খুবই খারাপ, বাঁচানো কঠিন। এরপর তাকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দিলেও ততক্ষণে রুবিনা প্রায় শেষ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা যায় সে।
চিকিৎসকদের ভুলে প্রসূতির মৃত্যুতে বিক্ষোভ করছেন স্বজনরা
এদিকে রুবিনার মৃত্যুর পর চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্বজনরা। পরিচিত রোগী হওয়ায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল বাসিত রুম্মানসহ অন্য নেতারা। কিন্তু ততক্ষণে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পালিয়ে যান। শুধু জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল মান্নান সবার সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে- এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। স্বজনদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখবে হাসপাতাল প্রশাসন।
এ বিষয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। ভুল চিকিৎসা না অন্য কিছু তা তদন্তের আগে বলা যাবে না। তবে তদন্তে ভুল চিকিৎসা প্রমাণিত হলে দায়ীদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
অভিযোগের বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম মিঞা বলেন, এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দায়ের করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছামির মাহমুদ/এমএমজেড/এমএস