নুসরাত হত্যা মামলা : সাক্ষ্য দিলেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, ০৭ আগস্ট ২০১৯
ফেনীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। পরে আসামি পক্ষের কৌঁসুলিরা তাকে জেরা করেন।
আদালত সূত্রের বরাত দিয়ে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ বলেন, নুসরাত হত্যা মামলায় বিচারক, পুলিশ ও চিকিৎসকসহ ৯২ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত বাদীসহ ৮০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা চলাকালে আদালতে নুসরাত হত্যা মামলার ১৬ আসামি উপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ডা. সোহেল মাহমুদ, ডা. প্রদীপ বিশ্বাস, ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস, ডা. মো. ওবায়দুল ইসলাম, ডা. এ কে এম মনিরুজ্জামান ও সিনিয়র নার্স অর্চনা পাল আদালতে সাক্ষ্য দেবেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাক্ষ্য দিতে গিয়ে পিবিআইর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘নুসরাত হত্যা মামলার কয়েকজন আসামির স্বীকারোক্তি মতে সোনাগাজী ইসলামীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির তৎকালীন সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিনকে তাকিয়া রোড থেকে গ্রেফতার করা হয়।’
এছাড়া তিনি নুসরাত হত্যা মামলার বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতারের সময়, স্থান ও কী কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে আদালতের কাছে তুলে ধরেন।
সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঁচ চিকিৎসক ও এক সেবিকার সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল। ওই সময় তারা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের মাধ্যমে আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করেন। বৃহস্পতিবার তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা রয়েছে।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ জনের সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
রাশেদুল হাসান/এমবিআর/এমএস