ত্রাণ না দিয়ে চলে গেলেন কৃষিমন্ত্রী, স্লিপ হাতে বিক্ষোভ
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৮:০৪ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০১৯
টাঙ্গাইলে ভূঞাপুর উপজেলায় কৃষিমন্ত্রীর ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে ত্রাণ না পেয়ে স্লিপ হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বন্যাকবলিতরা। একই সঙ্গে ত্রাণের দাবি জানিয়েছেন তারা। সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে ভূঞাপুর পৌরসভার টেপিবাড়ি স্কুল মাঠে আয়োজিত ত্রাণ বিতরণ অনুুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। অনুষ্ঠান শেষে কৃষিমন্ত্রী মঞ্চ থেকে চলে যাওয়ার পর ত্রাণ না পেয়ে টেপিবাড়ি থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান বন্যাকবলিতরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার ভূঞাপুর উপজেলার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ বিতরণ করেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। কিন্তু টেপিবাড়ি স্কুল মাঠে আয়োজিত ত্রাণ বিতরণ অনুুষ্ঠানে কোনো ত্রাণ দেননি তিনি। এর মধ্যে পৌরসভার টেপিবাড়ি এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে অর্জুনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সিলযুক্ত স্লিপ নিয়ে আসেন বন্যাকবলিতরা। ত্রাণ না পেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা।
এর আগে অর্জুনা ইউনিয়নের তারাই গ্রামের ১০০ জনের হাতে ত্রাণের স্লিপ দেয়া হয়। এরপরও কৃষিমন্ত্রীর ত্রাণ অনুষ্ঠানে ত্রাণ পাননি তারা। ফলে ক্ষোভে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদে যান বন্যাদুর্গতরা।
বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসা তারাই গ্রামের গোলাপ হোসনের স্ত্রী খালেদা ও বাদলের স্ত্রী রাশিদাসহ অনেকেই জানান, টেপিবাড়িতে কৃষিমন্ত্রী ত্রাণ দিতে আসবে এ কথা বলে স্থানীয় মেম্বার (ইউপি সদস্য) মিনহাজ আমাদের চেয়ারম্যানের সিলযুক্ত ত্রাণের স্লিপ দেন। পরে স্লিপ নিয়ে কৃষিমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে আসি। কিন্তু কৃষিমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর সেখান থেকে আমাদের কোনো ত্রাণ দেয়া হয়নি। পরে সেখানকার লোকজন জানায় আমাদের জন্য কোনো ত্রাণ বরাদ্দ নেই। কৃষিমন্ত্রী বক্তব্য দিয়ে চলে গেছেন, আমাদের ত্রাণ দেননি।
মিছিলের নেতৃত্ব নেয়া অর্জুনা ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মিনহাজ উদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী মোল্ল্যা ত্রাণ দেয়ার জন্য আমাকে ১০০ পরিবারের স্লিপ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী তারাই গ্রামের ১০০ পরিবারের মাঝে ওই স্লিপ বিতরণ করা হয়। পরে টেপিবাড়িতে কৃষিমন্ত্রী ১০ জনের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে চলে যান। বাকি ৯০ জনের ত্রাণ সেখানে ছিল। কিন্তু যারা ত্রাণের স্লিপ নিয়ে গেছে তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিছিল নিয়ে ইউএনওর কাছে ত্রাণ না পাওয়ার বিষয়টি জানাতে এসেছি আমরা।
অর্জুনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের আইয়ুব আলী মোল্ল্যা বলেন, স্লিপ পাওয়া সবার মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
কৃষিমন্ত্রী চলে যাওয়ার কারণে সেখান থেকে আমরাও চলে এসেছি। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা পরিষদে গেছি আমরা। তাদের ত্রাণ পাওয়া গেছে। স্থানীয় মেম্বার মিনহাজের মাধ্যমে তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, টেপিবাড়ি এলাকায় ২০০ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র অর্জুনা ইউনিয়নে আরও ১০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য চেয়ারম্যানের মাধ্যমে স্লিপ বিতরণ করেছেন। ভুল বোঝাবুঝির কারণে স্লিপ পাওয়া লোকজন একত্রিত হয়ে উপজেলা পরিষদে এসেছেন। কিন্তু তাদের ত্রাণ মজুত রয়েছে। পরবর্তীতে তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
আরিফ উর রহমান টগর/এএম/এমএস