আদালতে দাঁড়িয়ে ভালোবাসার কথা বলা মেয়েটি এখন লাশ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৭:১২ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০১৯

ভালোবেসে ফারুকের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন খুশিলা খাতুন ওরফে খুশি (১৮)। সাত মাস আগে বিয়ে করেন তারা। এ অবস্থায় মেয়েকে অপ্রাপ্তবয়স্ক দাবি করে স্বামী ফারুকের নামে অপহরণ মামলা করেন খুশির বাবা।

ওই মামলায় আদালতে দাঁড়িয়ে বিচারককে খুশি বলেছিলেন, ‘অপহরণ নয়, ভালোবেসে বিয়ে করেছি আমরা। স্বামীর সঙ্গেই থাকতে চাই আমি।’

খুশির এমন জবানবন্দির ভিত্তিতে স্বামীর কাছে থাকার রায় দেন আদালতের বিচারক। অথচ এ ঘটনার কিছুদিন পরই স্বামী ফারুকের বাড়িতে খুশির ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে।

এদিকে মেয়ে খুশিকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে শুক্রবার যশোর কোতোয়ালি থানায় স্বামীসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন মেহেরপুর সদর উপজেলার কন্দেপপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবা দাউদ হোসেন।

মামলার আসামিরা হলেন খুশির স্বামী ফারুক হোসেন, শ্বশুর আব্দুর রাজ্জাক, ননদ নাছিমা খাতুন, ফারুকের প্রথম স্ত্রী শারমিন বেগম এবং শাশুড়ি। শুক্রবার আবদুর রাজ্জাক ও নাছিমা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন : হাইকোর্টে এসে জিতল অদিতির ভালোবাসা

এর আগে বৃহস্পতিবার যশোর সদর উপজেলার নওদাগ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে ফারুক হোসেনের বাড়ি থেকে খুশির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর সিঙ্গাপুর ছিলেন ফারুক হোসেন। আট মাস আগে দেশে আসেন। যশোর সদর উপজেলার নওদাগ্রামে তিনতলা বাড়িতে প্রথম স্ত্রী শারমিনকে নিয়ে থাকতেন। এরই মধ্যে পূর্বপরিচিত মেহেরপুরের দাউদ হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে যান ফারুক। সেখানে অবস্থানকালে খুশির সঙ্গে পরিচয় হয় তার। একপর্যায়ে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িতে পড়েন।

সাত মাস আগে ফারুক ও খুশি পালিয়ে বিয়ে করেন। মেয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাকে অপহরণ করা হয়েছে দাবি করে দাউদ হোসেন মেহেরপুর থানায় অপহরণ মামলা করেন।

মামলার পর ফারুক ও খুশি যশোরের বাড়িতে একসঙ্গে থাকতেন। কিন্তু ফারুকের দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ ছিল।

আরও পড়ুন : বিয়ের আসরে কনের বাবাকে হত্যার দায় স্বীকার সজীবের

অন্যদিকে পালিয়ে বিয়ে করায় দাউদ হোসেনের পরিবারের সঙ্গে খুশির যোগাযোগ ছিল না। শুধু মামলার হাজিরার দিন তাদের দেখা হতো। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফারুক হোসেনের বাড়ির গ্রিলে থেকে খুশির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, খুশির বাবা পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। ইতোমধ্যে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে তৎপর পুলিশ।

মিলন রহমান/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।