যমজ নাতিকে নিয়ে নানির ভীতি, চিকিৎসা চলছে বাড়িতে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নরসিংদী
প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, ০২ আগস্ট ২০১৯

নরসিংদীতে পেট ও বুক জোড়া লাগানো যমজ দুই শিশুর জন্ম দিয়েছেন এক প্রসূতি। তবে বাবা-মায়ের মুখে কোনো হাসি নেই। আলো যেন অন্ধকারে পরিণত হয়েছে তাদের। সন্তানদের কীভাবে চিকিৎসা করাবেন এ চিন্তায় এখন সবার মুখ ভার।

তবে নরসিংদীর ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের আশ্বাসে কিছুটা হলেও মুখ থেকে অন্ধকার দূর হয়েছে জোড়া লাগানো সন্তানদের বাবা-মায়ের। তিনি বলেন, শিশু দুটির সব অরগান যদি আলাদা আলাদা থাকে, তাহলে তাদের বাঁচানো সম্ভব। এজন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অথবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করতে হবে।

এর আগে গত বুধবার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যমজ শিশুদের জন্ম দেন নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী সুমি আক্তার। জন্মের পর দেখা যায় দুটি শিশুর মাথা ও বুক থেকে পেট পর্যন্ত জোড়া লাগানো। তবে শিশু দুটির মাথা, নাক, কান ও মুখ আলাদা। খাবারও খাচ্ছে আলাদভাবে।

শিশু দুটির নানি নাসিমা বেগম বলেন, প্রতিদিনই তাদের দেখতে লোকজন বাড়িতে আসছে। এখন আমরা ভয়ে আছি। চিকিৎসা না করে বাসায় আনলেন কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে যদি ওদের রেখে দেয়। সেই ভয়ে বাসায় রেখে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।

Narsingdi-Twins-Baby

শিশুদের বাবা ইসমাইল মিয়া বলেন, আল্লাহ আমাকে যমজ দুটি সন্তান দেয়ায় আমি খুশি। আল্লাহ ভালো বুঝেই হয়তো তাদের পাঠিয়েছেন। তবে আমার যে আর্থিক অবস্থা তাতে সন্তানদের সুচিকিৎসা করা বড়ই কঠিন। ওদের আলাদা করতে না পরলে খুব কষ্ট হবে।

সিজারিয়ান অপারেশনের পর খানিকটা অসুস্থ নবজাতকদের মা সুমি আক্তার। একদিকে নিজের অসুস্থতা, অন্যদিকে জোড়া লাগানো সন্তান। সব মিলিয়ে অনেকটা কষ্টে আছেন তিনি।

তিনি বলেন,আমরা গরিব মানুষ। আমার বাবা রিকশা চালক। স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। সন্তানদের আলাদা করতে যে খরচ তা আমাদের নেই। তাই কীভাবে তাদের বাঁচিয়ে রাখবো সেই চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

রায়পুরা ডৌকারচর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ ফরাজি বলেন, পরিবারটা খুবই দরিদ্র। তাই আমরা খুব চিন্তিত, কীভাবে তাদের চিকিৎসা হবে? আমরা স্থানীয়ভাবে কিছু সহায়তা করছি। তবে সরকারিভাবে সহায়তা পেলে তাদের বাঁচানো সম্ভব।

নরসিংদীর (ভারপ্রাপ্ত) সিভিল সার্জন ডা. আমিরুল হক শামীম বলেন, এ চিকিৎসায় অনেক খরচ। প্রয়োজনে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আর্থিক সহায়তা করা হবে।

সঞ্জিত সাহা/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।