নোয়াখালীতে দুই হাসপাতাল বন্ধ করে দিলেন ম্যাজিস্ট্রেট
নানা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালী সদরের হাসপাতাল রোডের দুটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারকে জরিমানা ও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি দুটি হচ্ছে- স্কয়ার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ডক্টরস চেম্বার ও নোয়াখালী ইনসাফ হাসপাতাল (প্রা.) লিমিটেড।
জানা গেছে সোমবার রাতে প্রতিষ্ঠান দু’টিতে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় নানা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠান দু’টিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানাসহ বন্ধ করে দেয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মো. রোকনুজ্জামান খান। প্রসিকিউটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. মমিনুর রহমান, ড্রাগ সুপার মাসুদুজ্জামান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন উপ-পরিদর্শক হিমেল চামকার নেতৃত্বে সুধারাম মডেল থানা পুলিশ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মো. রোকনুজ্জামান খান জানান, নোয়াখালী স্কয়ার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ডক্টরস চেম্বারের লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ, নেই প্যাথলজিস্ট, ল্যাব ট্যাকনেশিয়ান এবং এক্স-রে করার রেডিওগ্রাফী মেশিন। লাইসেন্স নেই আনবিক শক্তি কমিশনেরও।
এছাড়া প্রদর্শিত মূল্য তালিকার সঙ্গে গ্রাহককে প্রদেয় রশিদের টাকার পরিমাণে গড়মিল, ৪ বছরের পুরাতন ডাক্তারের নাম ব্যবহার করে ডাগায়নস্টিক চালানো ও নোংরা পরিবেশ এবং ফার্মেসি পরিচালনায় নেই কোনো ফার্মাসিস্ট। ফার্মেসিতে বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করা হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ।
এসব অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া বিধি অনুযায়ী নির্দিষ্ট মানে উত্তরণ না হওয়া পর্যন্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নবায়ন না করার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমানকে অনুরোধ এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে ড্রাগ আইন অনুযায়ী ফার্মাসিস্ট নিয়োগ না করা পর্যন্ত ফার্মেসিও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি তত্ত্বাবধানের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ড্রাগ সুপার মাসুদুজ্জামানকে অনুরোধ করা হয়।
অপরদিকে নোয়াখালী ইনসাফ হাসপাতালে ও দেখা যায়- নোংরা পরিবেশে ছোট ছোট কক্ষে রোগীদের রাখা হয়েছে। নেই কোনো নার্স, আয়া। ডাক্তারদের সঙ্গে লিখিত চুক্তি ছাড়াই তাদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। মূল্য তালিকায় সকল সেবার উল্লেখ নেই। বিধি অনুযায়ী নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম। অপারেশন থিয়েটারের অবস্থা খুবই নাজুক এবং হাসপাতালের ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্ট নেই। রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ।
এসব অপরাধে এই প্রতিষ্ঠানটিকেও মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে বিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠনটিকে এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা এবং এ সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট মানে উত্তরণ না হতে পারলে হাসপাতাল পরিচালনার লাইসেন্স বাতিল করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদারতের সঙ্গে থাকা সিভিল সার্জন ডা. মমিনুর রহমানকে অনুরোধ করা হয়।
একই সঙ্গে ড্রাগ আইন অনুযায়ী ওই হাসপাতালে স্থাপিত ফার্মেসি বন্ধ ঘোষণা এবং তা তত্ত্বাবধান করার জন্য উপস্থিত ড্রাগ সুপার মাসুদুজ্জামানকে অনুরোধ করা হয়।
মিজানুর রহমান/এমএমজেড/এমকেএইচ