কমছে পদ্মার পানি, সঙ্গে নিচ্ছে ঘরবাড়ি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ১২:১৪ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৯
পদ্মা নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের মুন্সীকান্দি এলাকায় প্রায় ১৫টি বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। আরও প্রায় ৩০টি বাড়িঘর ভাঙনের মুখে রয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙন রোধে এক হাজার ৯৪৬টি বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলেছে পাউবি।
শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবি) অফিস সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া শুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত সোমবার পর্যন্ত পদ্মা নদীতে পানি বাড়ছিল। মঙ্গলবার রাত ১টা থেকে পদ্মার পানি কমায় নাওডোবা মুন্সীকান্দি এলাকায় ভাঙতে শুরু করেছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, নাওপাড়া মুন্সীকান্দি গ্রামে মঙ্গলবার রাত থেকে নদীভাঙন চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সেখানকার প্রায় ১৫টি বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে।
নওপাড়া মুন্সীকান্দি গ্রামের লতিফ মাদবরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, দুই বছর আগেও তার স্বামীর ১০০ শতাংশ জমি ছিল। কিন্তু সর্বনাশা পদ্মা নদীর ভাঙনে তাদের ফসলি জমি, ভিটেমাটি নদীগর্ভে চলে যায়। জমি, বাড়ি সব হারিয়ে গত বর্ষার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য এনায়েতুল্লাহর দুই শতাংশ জমির ওপর দোচালা টিনের ঘর করে বৃদ্ধ স্বামী, ছেলে, ছেলের বউ ও দুই নাতনীকে নিয়ে থাকতেন। কিন্ত গত মঙ্গলবার রাতে সেই জমিও ঘরসহ নদীগর্ভে চলে যায়।
একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিন বেপারী বলেন, মঙ্গলবার রাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। ঘরের দরজা খুলে দেখি ঘরের সামনে পর্যন্ত জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় ঘরটি কোনো রকমে সরিয়ে নিতে পেরেছি। এখন অন্যের জমিতে টিনের ছাপড়া দিয়ে বসবাস করছি।
নওপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ আজগর সোহেল মুন্সী বলেন, পদ্মা নদীর পানি কিছুটা কমায় বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, নওপাড়া মুন্সীকান্দির ১৫টির মতো ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেকগুলো বাড়িঘর হুমকির সম্মুখীন ছিল বিধায় তাদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করেছি।
শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র বনিক বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ভাঙন রোধে বুধবার নওপাড়া মুন্সীকান্দি এলাকায় এক হাজার ৯৪৬টি বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। ওখানে ৪ হাজার ৪৮৭টি জিওব্যাগ ফেলা হবে।
ছগির হোসেন/এফএ/জেআইএম