ফের তিস্তার পানি বৃদ্ধি, নতুন করে বন্যার আশঙ্কা
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৯:৩০ পিএম, ২২ জুলাই ২০১৯
লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি নেমে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সোমবার বিকেল থেকে তিস্তা নদীর পানি ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানি কুলাঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ডালিয়া বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১২ দিনে তিস্তা নদীর পানির তোড়ে জেলার আদিতমারী উপজেলার নদীরক্ষা কুটিরপাড় বাঁধের ২০০ মিটার ধসে গিয়ে হাজারো পরিবার প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি থাকলেও অধিকাংশ চরেই তেমন কোনো ত্রাণ কিংবা সাহায্য সহযোগিতা পৌঁছায়নি। এতে দুভোর্গে পড়েছে ভানবাসিরা।
জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত শনিবার (১২ জুলাই) মধ্যরাতে হাতীবান্ধা থেকে বড়খাতার বাইপাস সড়কের তালেব মোড় এলাকার পাকা সড়কটির বড় একটি অংশ ভেঙে যায়। এতে হাতীবান্ধা-বড়খাতা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ব্যাহত হচ্ছে এখানকার লোকজনের স্বাভাবিক কার্যক্রম। সড়কটি ১৪ দিন আগে ভেঙে গেলেও এখনো মেরামত করা হয়নি। প্রতিদিন বাধ্য হয়ে হাঁটু পানিতে আবার কখনো কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে ওই এলাকার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের।
গত ১২ দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার,সানিয়াজান, ফকিরপাড়া, সিন্দুরনা, ডাউয়াবাড়ি, গড্ডীমারী, পাটিকাপাড়া, চর গড্ডীমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর, চর বৈরাতী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা, গোর্বধন, কুটির পার ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, মোগলহাট, কুলাঘাটসহ নদী তীরবর্তী ১৬টি ইউনিয়নের ৩৬টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও স্কুল-কলেজ। দুর্ভোগ বেড়েছে পানিবন্দি মানুষের।
পানিবন্দি পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনও অধিকাংশই পাননি ত্রাণ কিংবা কোনো সাহায্যে-সহযোগিতা। হাতীবান্ধা উপজেলার কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে না থাকা পরিবারগুলো স্থানীয় গড্ডিমারী উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ছড়িয়ে পড়েঠে নানা পানিবাহিত রোগ।
হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, ১২ দিন ধরে ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডে প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। সরকারি সাহায্য খুব কম পেয়েছি।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে ৪১০ মেট্রিক টন চাল, ৩ হাজার ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও নগদ ৯ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
রবিউল হাসান/আরএআর/এমএস