শেরপুরে বন্যার পানিতে ডুবে কিশোরের মৃত্যু
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০৪:৫৮ পিএম, ২২ জুলাই ২০১৯
শেরপুরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে থাকলেও এখনো বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে বানভাসি মানুষের। বন্যাকবলিত এলাকায় সুপেয় খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বাড়ছে ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বর, চুলকানিসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ।
এদিকে শেরপুরে সদর উপজেলার মধ্যবয়ড়া এলাকায় বন্যার পানিতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ এক কিশোরের মরদেহ ২০ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে দমকল কর্মীরা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলের অনতিদূরে পানির পাকের মধ্যে নিমজ্জিত অবস্থায় তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সুমন মিয়া (১২) ওই এলাকার সাইকেল মিস্ত্রি গোলাম মোস্তফার ছেলে। রোববার বিকেল ৩টার দিকে তিন বন্ধু মিলে বন্যার পানিতে গোসল করতে গিয়ে পানির পাকে পড়ে সুমন নিখোঁজ হয়েছিল। ভাতশাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এনিয়ে চলমান বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুর জেলায় ৯ দিনে ১১ শিশুসহ ১৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো। শিশু ও নারীসহ ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলতি বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে সোমবার পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ শাখার কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সোমবার বিকেলে জানান, চলতি বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ৫ উপজেলার ৪২ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার ২০৩ গ্রামের ৭৫ পরিবার সম্পূর্ণ এবং ১৬ হাজার ১০ পরিবার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১০ জন মারা যাওয়া ছাড়াও ৫০০ মানুষ সম্পূর্ণ এবং ১ লাখ ১৪ হাজার মানুষ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে জেলায় ৯০টি ঘরবাড়ি, ১ হাজার ৯০ হেক্টর জমির ফসল, ১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড় ২ হাজার ২০৫টি ঘরবাড়ি, ৩ হাজার ৬৩৭ হেক্টর জমির ফসল, পৌনে ৯ কিলোমিটার বাঁধ, ২ দশমকি ৬৬ কিলোমিটার রাস্তা এবং ১৪৫টি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারিভাবে বন্যার্তদের মাঝে ১০৫ মেট্রিক টন খয়রাতি চাল ও নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কের পোড়ার দোকান ডাইভারশনের ওপর দিয়ে এখনও প্রবল বেগে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই সড়কে যানবাহন চলাচল গত চারদিন ধরে বন্ধ হয়ে শেরপুর থেকে জামালপুর হয়ে রাজধানী ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
হাকিম বাবুল/আরএআর/জেআইএম