কাভার্ডভ্যান চাপায় সার্জেন্ট কিবরিয়া হত্যার কঠোর বিচার দাবি
দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কাভার্ডভ্যানের চাপায় ট্রাফিক সার্জেন্ট গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীকে কঠোর শাস্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলে বরিশাল স্ট্রিট বাইকার্স গ্রুপের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- সার্জেন্ট গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করা যমুনা গ্রুপের কাভার্ডভ্যানের চালককে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান, কিবরিয়া হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে করা, কাভার্ডভ্যানের হেলপারের সম্পৃক্ততা থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা, রাষ্ট্র কর্তৃক কিবরিয়ার সন্তানের দায়িত্ব গ্রহণ, সার্জেন্ট কিবরিয়াকে চাপা দেয়ার স্থানে তার নামে ‘শহীদ সার্জেন্ট কিবরিয়া পুলিশ বক্স নির্মাণ’ এবং বরিশালসহ অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় গাড়ির নির্দিষ্ট গতিসীমা করে দেয়া।
আরও পড়ুন : চোখের জলে সার্জেন্ট কিবরিয়াকে শেষ বিদায়
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল স্ট্রিট বাইকার্স সদস্য ওয়াহেদ রাব্বী। এতে বক্তব্য রাখেন সিমথি অধিকারী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও মির্জাগঞ্জের বাসিন্দা মো. সোহেল রানা এবং হাসিবুল হাসান মিতুল।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের কর্নকাঠি জিরো পয়েন্ট এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট গোলাম কিবরিয়া।
আরও পড়ুন : দাদা-দাদির পাশে সমাহিত হবেন সার্জেন্ট কিবরিয়া
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পটুয়াখালীগামী যমুনা গ্রুপের বেপরোয়া গতির একটি কাভার্ডভ্যানকে (ঢাকা-মেট্রো-উ-১২-২০৫৪) থামার সংকেত দেন সার্জেন্ট কিবরিয়া। কাভার্ডভ্যানটি সংকেত অমান্য করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সার্জেন্ট কিবরিয়া একটি মোটরসাইকেলে ধাওয়া করে কাভার্ডভ্যানটির সামনে গিয়ে ফের তাকে থামার সংকেত দেন।
তখন কাভার্ডভ্যানচালক জলিল মিয়া মোটরসাইকেল আরোহী সার্জেন্ট কিবরিয়াকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী ঝালকাঠির নলছিটি থানা পুলিশ ধাওয়া করে চালক জলিল মিয়াসহ কাভার্ডভ্যানটি আটক করে।
আরও পড়ুন : সার্জেন্ট কিবরিয়ার জন্য কাঁদছেন সহকর্মীরা
কিবরিয়ার অবস্থার অবনতি হওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সেদিন বিকেল সোয়া ৫টার দিকে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কিবরিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পরপরই তাকে জরুরি বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সার্জেন্ট গোলাম কিবরিয়া প্রায় সাড়ে ৪ বছর ধরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী ইউনিয়নে। তার বাবা ইউনুস সরদার সুবিদখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।
সাইফ আমীন/এএম/এমকেএইচ