বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে নেত্রকোণায়
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোণা
প্রকাশিত: ১০:৩২ এএম, ১৮ জুলাই ২০১৯
নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। টানা ১০ দিন বৃষ্টি থাকার পর গত মঙ্গলবার রাত ৮টার পর থেকে জেলার কোথাও বৃষ্টি হয়নি। বুধবার সকাল থেকে রোদের দেখা মিলেছে। এতে নদ-নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে কংস নদের জারিয়া পয়েন্টে এখনও ১৪২ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ বিতরণ চললেও পানিবন্দি মানুষের মাঝে বাড়ছে ত্রাণের চাহিদা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা, পূর্বধলা, মোহনগঞ্জ, আটপাড়া, মদন, খালিয়াজুরি ও সদর উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে বন্যার পানি প্রবেশ করে। বিশেষ করে কলমাকান্দা উপজেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, পুরো জেলায় ৮৬টি ইউনিয়নের মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩২টি ইউনিয়ন। এর মধ্যে ১৮ হাজার ৫২৭টি পরিবারের ৯৩ হাজার ১০৫ জন মানুষ এখনও পানিবন্দি রয়েছেন। পানি প্রবেশ করায় ৪৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৮৮টি ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৫টি রয়েছে।
বন্যার্তদের জন্য ৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রয়েছে। এর মধ্যে খালিয়াজুরিতে ২৫টি ও কলমাকন্দায় ৪টি রয়েছে। ওই আশ্রয়কেন্দ্রে এখনও ২২৫ জন মানুষ অবস্থান করছেন। বন্যার পানিতে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে দুইজন নিহত হয়েছেন।
বন্যার পানিতে জেলার ২৮৩ একর বীজতলা ও ২৩২ একর সবজি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ১২৫ মেট্রিক টন চাল ও ৩ হাজার ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, কিছু বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও যোগাযোগ সড়ক থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। একটু স্বাভাবিক হলে ওই বিদ্যালয় চালু করে নিয়মিতভাবে ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে।
নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাকিকুল ইসলাম জানান, কলমাকান্দা-ঠাকুরাকোণা সড়কের অধিকাংশ স্থানে এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলে ওই সড়কটি মেরামত করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হবে।
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, শুধু সোমেশ্বরী নদী ছাড়া সবকয়টি নদীর পানিই ধীর গতিতে কমতে শুরু করেছে। সোমেশ্বরীর জারিয়া পয়েন্টে এখনও বিপৎসীমার ১৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
কামাল হোসাইন/এফএ/জেআইএম