ক্লিনিকে মৃত্যুর পর প্রসূতিকে সরকারি হাসপাতালে পাঠালেন ডাক্তার

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক বেনাপোল (যশোর)
প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৯

যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া-সাতমাইলে রুবা ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় হীরা বেগম (২৪) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। হীরা বেগম সোমবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে মারা যান। এর আগে বিভিন্ন সময়ে ওই ক্লিনিকে অপচিকিৎসায় চারজন মারা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

রোগীর স্বজনরা বলছেন, ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার পর তিন দিন রোগী যন্ত্রণায় ছটফট করলেও চিকিৎসক সিজার বা অন্যত্র রেফার্ড না করে প্রসূতিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন।

রুবা ক্লিনিকে মারা যাওয়া হিরা বেগমের স্বামী কবির হোসেন জানান, গত শনিবার (১৩ জুলাই) তার স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে তার স্বজনেরা রুবা ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পর চিকিৎসক আহসান হাবীব রানা বলেন, ‘এখনও সময় হয়নি। নরমাল ডেলিভারি হবে, অপেক্ষা করুন।’ এর মধ্যে প্রসব বেদনা কমে যায়। রোববার (১৪ জুলাই) রাত থেকে রোগী প্রসব বেদনায় ছটফট করতে শুরু করলে ডা. রানা ঘুমের ওষুধ দিয়ে রোগীকে ঘুম পাড়িয়ে রাখেন। সোমবার (১৫ জুলাই) রাত ৮টায় আবারও ছটফট করতে করতে হিরা বেগম মারা যান। এ সময় ডা. রানা তড়িঘড়ি করে উন্নত চিকিৎরার জন্য শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে বলেন স্বজনদের। দ্রুত সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. পরিতোস কুমার ধর জানান, রোগী অনেক আগেই মারা গেছে।

এ ব্যাপারে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. পরিতোস কুমার ধরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোগী রাত ৮টার আগেই মারা গেছেন এবং পেটের বাচ্চা দুইদিন আগেই মারা গেছে।

এর আগে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এই ক্লিনিকে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় ঝিকরগাছার শিমুলিয়া গ্রামের সুকুমার দাস (৪০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এরপর একই বছরের ১৫ জুন ডাক্তারের ভুল অপারেশনে মারা যান একই উপজেলার খাসখালি গ্রামের শিমুল (৩০) নামে এক যুবক। এরপর ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর এই ক্লিনিকে ডাক্তারের অপচিকিৎসায় শার্শা উপজেলার সামটা গ্রামের আলমগীর ড্রাইভারের স্ত্রী আয়েশা বেগম (২৭) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়।

স্থানীয়রা জানান, এর আগেও এ ক্লিনিকে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন বিয়ে রেজিস্ট্রার হাফিজুর রহমানের স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে এ ক্লিনিকের ডাক্তারদের অপচিকিৎসায় মারা যান।

এ ব্যাপারে রুবা ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. আহসান হাবীব রানাকে বার বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আব্দুর রহিম হাওলাদার জানান, এ ব্যাপারে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জামাল হোসেন/আরএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।