ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, কিনছে সবাই নৌকা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৯

ছয় দিনের টানা বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে সুনামগঞ্জের চারদিকে এখন পানি। বৃষ্টির পাশাপাশি রয়েছে ভারতীয় পাহাড়ি ঢল। ফলে পাহাড়ি ঢলে পানি সরাসরি এসে পড়ছে হাওরে। ডুবে গেছে অনেক নিম্নাঞ্চল ও রাস্তাঘাট। যে রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করতো এখন সে রাস্তায় ব্যবহার করতে হচ্ছে নৌকা। এ অবস্থায় নৌকা বিক্রির ধুম পড়েছে। বাড়ি থেকে বাজারে যাতায়াতের জন্যও এখন ব্যবহার করতে হচ্ছে নৌকা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি শনিবার শহরের ধোপাখালী এলাকা ও মাইজবাড়ি এলাকায় বসে নৌকার হাট। এখানে নৌকা বিক্রির জন্য আসেন অনেক ব্যবসায়ী। নৌকার সঙ্গে রয়েছে বৈঠা। নৌকার দামে রয়েছে ভিন্নতা। ছোট নৌকা বিক্রি হয় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায়। বড় নৌকা বিক্রি হয় ৮-১০ হাজার টাকায়। বছরের অন্য সময় খারাপ গেলেও বর্ষা মৌসুম আর বন্যায় জমে উঠেছে নৌকার হাট।

সরেজমিনে সুনামগঞ্জ শহরের ধোপাখালী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নৌকা কিনতে মানুষের ভিড়। নৌকা বিক্রি করতে এসেছেন অনেক বিক্রেতা। পানির মধ্যে ভাসমান অবস্থায় রাখা হয়েছে নতুন তৈরি করা নৌকাগুলো। বড়-মাঝারি এবং ছোট নৌকার দেখা মেলে এই নৌকার হাটে। হঠাৎ করে নদী ও হাওরে পানি বেড়ে যাওয়ায় সোমবার এই নৌকা বাজারে ছিল মানুষের ভিড়। দামাদামি করে ও ভালো কাঠের নৌকা ক্রয় করতে এসেছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

boat

নৌকা কিনতে আসা আফতাব মিয়া বলেন, হাওরে পানি বেড়েছে। বাজার থেকে বাড়িতে যাতায়াতের জন্য নৌকা কিনতে এলাম। নৌকার মান যাচাই-বাছাই করতেছি। বন্যার সময় বুঝে বিক্রেতারা প্রতি নৌকায় ৫ হাজার টাকা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে বাজারে বিক্রি করা ৮ হাজার টাকার নৌকার দাম মূলত ৩ হাজার টাকা ছিল।

স্থানীয় আরেক ক্রেতা সুলেমান মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জের ধুপাখালী ও মাইজবাড়ি এলাকায় নৌকার হাট বসে। এটা অনেক পুরনো বাজার। হাওরে পানি বেড়েছে। মাছ ধরার জন্য একটা মাঝারি নৌকা কিনতে এসেছি। কিন্তু বর্তমানে নৌকার দাম বাড়তি। তবুও ভাবছি একটা নৌকা কিনব।

নৌকা ব্যবসায়ী মো. সেলিম বলেন, বর্ষা মৌসুমে নৌকা কেনা-বেচার ধুম থাকে। এখান থেকে নৌকা কিনে যাতায়াত করেন হাওরাঞ্চলের মানুষ। ফসল তোলা, মাছ শিকারসহ নানা কাজে নৌকা ব্যবহার করেন স্থানীয়রা।

boat

আরেক ব্যবসায়ী রাজা দাশ বলেন, বর্ষা মৌসুমে কাঠ ব্যবসায়ীদের হাতে তেমন একটা কাজ থাকে না। নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। বিভিন্ন রকমের নৌকা তৈরি করতে সময় ও কাঠের প্রয়োজন। ছোট নৌকা দু-চারদিন ও বড় নৌকা ১০-১৫ দিন সময় লাগে বানাতে। সে হিসাবে নৌকার দাম দেয়া হয়।

বৈঠা বিক্রি করা সবুজ আলী বলেন, বৈঠার দামে রয়েছে ভিন্নতা। এখানে ৩০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকার বৈঠা আছে। কাঠ ভালো হলে দামটা একটু বেশি হয়। নতুন নৌকা যেমন বিক্রি হয় ঠিক তেমন বৈঠাও বিক্রি হয়। এই বৈঠা বিক্রি করে বর্তমানে আমাদের সংসার চলে।

মোসাইদ রাহাত/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।