কালীগঞ্জের অরক্ষিত ৮ রেল ক্রসিংয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক কালীগঞ্জ (গাজীপুর)
প্রকাশিত: ০১:৫০ পিএম, ০৭ জুলাই ২০১৯
কালীগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের অরক্ষিত ক্রসিং

গেটম্যান ও গেটবার না থাকায় অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে গাজীপুরের কালীগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের ৮টি অরক্ষিত রেল ক্রসিং। কয়েকদিন পরপরই ওই অরক্ষিত রেল ক্রসিংগুলোতে ঘটছে দুর্ঘটনা।

এছাড়া জনস্বার্থে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের টাঙানো সতর্ক নোটিশ বোর্ডের কোথাও কোথাও রঙ উঠে গেছে। কোথাও আবার নোটিশ বোর্ডের সামনের অংশ আগাছায় ভরে গেছে।

kaligonj

এ অবস্থায় অনতিবিলম্বে রেল ক্রসিংগুলোতে গেটম্যান ও গেটবারের ব্যবস্থা করাসহ সতর্ক নোটিশ বোর্ডগুলোর সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, প্রতিদিন এই রেলরুট দিয়ে ঢাকা থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম ও ভৈরব হয়ে ময়মনসিংহে প্রায় ৫০টি ট্রেন আসা-যাওয়া করছে। কিন্তু কালীগঞ্জ উপজেলা সীমানায় ৮টি রেল ক্রসিংয়ে নেই কোনো গেটম্যান বা গেটবার। এগুলো হলো-নলছাটা, বান্দাখোলা (কামারবাড়ী), তুমলিয়া (সাদ্দাম বাজার), খঞ্জনা (বড়নগর রোড), বালীগাঁও (চৌধুরী বাড়ী), বালীগাঁও (মোড়ল বাড়ী), বাঘারপাড়া ও দেওপাড়া। ফলে স্থানীয়রা প্রতিদিন মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে এসব রেল ক্রসিং পারাপার হচ্ছেন। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা।

সরেজমিনে দেখা যায় বিপজ্জনক এসব রেল ক্রসিংয়ে জনস্বার্থে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সতর্ক নোটিশ বোর্ডের কোথাও রঙ উঠে গেছে আবার কোথাও নোটিশ বোর্ডের সামনের অংশ আগাছায় ভরে গেছে। তাছাড়া ক্রসিংগুলো দিয়ে চলাচলকারী অনেক পথচারীই সতর্ক নোটিশ বোর্ড সম্পর্কে অজ্ঞ। এ ব্যাপারে তাদের কোনো ধারণা না থাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা।

kaligonj

তুমলিয়া (সাদ্দাম বাজার) রেল ক্রসিং এলাকার ষাটোর্ধো মুদি দোকানি ইদ্রিস মোল্লা জানান, রেললাইন পার হতে গিয়ে এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানটি খুবই দুর্ঘটনা প্রবণ। তাই এখানে একটি গেটবার একান্ত প্রয়োজন।

একই কথা বলেন ওই এলাকার কাপাসিয়া সিএনজি স্ট্যান্ডের সুপারভাইজার মো. আরিফ হোসেন। তিনি জানান, অতি সম্প্রতি এই রেল ক্রসিং ও বান্দাখোলা (কামারবাড়ী) রেল ক্রসিংয়ে দুই পথচারী মারা গেছেন। তাছাড়া গেটবার না থাকায় মাঝে মধ্যেই ইজিবাইক, অটোরিকশা, সিএনজি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

kaligonj

খঞ্জনা (বড়নগর রোড) রেল ক্রসিং এলাকার ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান (৯) জানায়, প্রতিদিন এই রেল ক্রসিং পার হয়ে তাকে কোচিং করতে যেতে হয়। এখানে কোনো গেটবার ও গেটম্যান না থাকায় সব সময় ভয়ে লাগে। বাঘারপাড়া রেল ক্রসিং এলাকায় কথা হয় পথচারী রাসেল মিয়ার সাথে। তিনি জানান, রেল ক্রসিং এর দু’পাশে রেল কর্তৃপক্ষের সতর্ক নোটিশগুলো অকেজো হয়ে গেছে। বোর্ডগুলোর কোথাও রঙ উঠে গেছে, আবার কোথাও সামনে জঙ্গল হয়ে গেছে। তাই এগুলো সংস্কার হওয়া দরকার। আর যেহেতু এই ক্রসিংগুলো দিয়ে চলাচলকারী পরিবহনের শ্রমিকরা অনেকেই লেখাপড়া জানেন না, তাই ওই সতর্ক নোটিশ বোর্ড তাদের জন্য কোনো কাজে আসবে না।

আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি ইতোমধ্যে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা শিগগিরইেএ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

জনস্বার্থে লাগানো সতর্ক নোটিশ বোর্ডগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। এটা রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কাজ, তারা ভালো বলতে পারবেন। তবে বিষয়টি তাদের অবগত করবেন বলে জানান তিনি।

আব্দুর রহমান আরমান/এমএমজেড/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।