১৯ মাস পর বেরিয়ে এলো কোহিনুর হত্যার রহস্য
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। ময়মনসিংহের পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এই রহস্য উদঘাটন করে।
ওই নারীর নাম কোহিনুর আক্তার (৩০)। তিনি কলমাকান্দা উপজেলার সৌলজান গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে এবং একই উপজেলার বানাইকোনা গ্রামের মো. ফজলু মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৮ নভেম্বর বিকেল ৩টার দিকে কলমাকান্দার বানাইকোনা গ্রামের সামনে একটি ধানখেত থেকে অজ্ঞাত এক নারীর অর্ধ গলিত মুখমণ্ডল বিকৃত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন কলমাকান্দা থানার পরিদর্শক আব্দুল গনি বাদী হয়ে মামলা করেন। পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় পিবিআইয়ের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। পিবিআই ডিএনএ পরীক্ষা করে ওই নারীর প্রকৃত পরিচয় শনাক্ত করে। এরপর পিবিআই ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে নিহতের স্বামী ফজলু মিয়ার সহযোগী একই গ্রামের আলাল উদ্দিনকে (২৫) গত মঙ্গলবার গভীর রাতে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর আলাল উদ্দিন কোহিনুরকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে বুধবার বিকেলে জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে সালমার আদালতে আসামি আলাল উদ্দিনকে হাজির করে পিবিআই। সেখানে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক সাংবাদিকদের জানান, ফজলু মিয়া ২০১৫ সালে কোহিনুরকে বিয়ে করেন। এর আগে তিনি আরও তিনটি বিয়ে করেন। দাম্পত্য কলহের জের ধরে ফজুল মিয়া কোহিনুরকে নিয়ে কৌশলে ২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হন। তারা বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ওই দিন রাত ১১টার দিকে তার সহযোগী আলাল উদ্দিনকে নিয়ে কোহিনুরের হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। শেষে কোহিনুরের দেহ ও মুখমণ্ডল এলোপাথারি কুপিয়ে বিকৃত করে বানাইকোনা গ্রামের সামনে একটি ধান খেতে ফেলে রাখেন।
আদালতে জবানবন্দি শেষে বিচারকের নির্দেশে আসামি আলাল উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর ফজলু মিয়াকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কামাল হোসাইন/এফএ/জেআইএম