মৃত ভেবে শাহীনকে পাটখেতে ফেলে দেয়া হয়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ০১:৫১ পিএম, ০৩ জুলাই ২০১৯

সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়া এলাকায় শাহীনকে নৃশংসভাবে আঘাতের পর মৃত ভেবে পাটখেতে ফেলে রেখে যায় অপরাধীরা। এরপর শাহীনের ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

গত শুক্রবার এমন অমানবিক ও নৃশংস ঘটনার পর শিশু শাহীনের একটি রক্তাক্ত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোচিত হয়। ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। অবশেষে ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার ভোরে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সরফাবাদ গ্রামের জাহাঙ্গীর মোড়ল (২৬), একই গ্রামের মৃত জহর আলী মোড়লের ছেলে নরিম মোড়ল (৬০) ও একই উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের শওকত আলীর ছেলে আজগর আলীকে (৩০) গ্রেফতার করে পুলিশ।

ঘটনার শিকার শাহীন কেশবপুর উপজেলার আহাদ আলীর ছেলে ও স্থানীয় একটি মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। মাদরাসা ছুটির দিন বাবার ভ্যানটি চালিয়ে রোজগার করত ছেলেটি। শাহীন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন।

পুলিশের হাতে আটক জাহাঙ্গীর মোড়ল জাগো নিউজকে জানান, ভ্যানটি ছিনতাই করার পরিকল্পনা করেন নরিম মোড়ল। পরে নাইমের মাধ্যমে ভ্যানটি ভাড়া করা হয়। শাহীনের মাথা থেতলে দেয় আজগর আলী ও নরিম মোড়ল। পরে তারা চারজন একসঙ্গে শাহীনের দেহটি পাটখেতে ফেলে দেন। এ সময় তারা ভেবেছিলেন শাহীন মারা গেছে। এ ঘটনার পর ভ্যানটি বিক্রি করে তিনি তিন হাজার ২৫০ টাকা পেয়েছেন।

Shahin-pic-2

এ ঘটনায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে দুপুর ১২টায় প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান জানান, গত ২৭ মে বৃহস্পতিবার তারা একত্রে বসে শাহীনের ভ্যানটি ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। সে মোতাবেক ৩৫০ টাকায় শাহীনের ভ্যানটি ভাড়া করে। পরদিন শুক্রবার দুপুরের দিকে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়া এলাকায় নির্জন স্থানে নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।

এ ঘটনায় সোমবার ঘটনায় জড়িত কেশবপুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রাম থেকে নাইমুর রহমান নাইমকে গ্রেফতার করা হয়। নাইমের স্বীকারোক্তি মতে ভ্যানটি উদ্ধার ও ভ্যানের ব্যাটারি ক্রেতাকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার নাইম আদালতে ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।

পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় জড়িত অপর তিনজনকে বুধবার ভোরে কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শিশু শাহীনের উপর নৃশংস এ ঘটনায় পাটকেলঘাটা থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় সকল অভিযুক্তরা গ্রেফতার, ছিনতাই হওয়া ভ্যানটি উদ্ধার ও ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করা হবে।

আকরামুল ইসলাম/এফএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।