ছেলের চীন যাওয়ার হাল ছেড়ে দিয়েছেন বাবা-মা
চীনের এন্ডহুই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অব ডিগ্রি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (৪ বছর মেয়াদি) কোর্সে শিক্ষাবৃত্তির সুযোগ পেয়েছেন হতদরিদ্র পরিবারের কিশোর কুমার। কিন্তু ভর্তি ও চীনে যাওয়ার টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় স্বপ্ন ভাঙতে বসেছে তার।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় পলাশী ইউনিয়নের কিসামত ক্ষুদ্র চন্দ্রপুর গ্রামে দিনমজুর কৈলাশ চন্দ্রের ছেলে কিশোর কুমার। তাদের দুই ছেলের মধ্যে বড় সে। ছোট ছেলে মিলন দশম শ্রেণির ছাত্র। আবাদি কোনো জায়গা জমি নেই। পাঁচশতক জমির ওপর তাদের ঘর।
কিশোর কুমার রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর গ্রামে নানা বাড়ি থেকে ২০০৮ সালে মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং ২০১৩ সালে একই বিদ্যালয় থেকে জেএসসিতে অংশগ্রহণ করে গোল্ডেন এ প্লাস পায়। ওই বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৫ পেয়েছে সে। এসএসসি পাস করে ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক্যাল সরকারি কলেজে টেকনোলজি আরটিকিউচার অ্যান্ড ইন্টেরিয়র ডিজাইন চার বছর মেয়াদি কোর্সেও মেধা তালিকায় কৃতকার্য হন। এ মহাবিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় সে আন্তর্জাতিক শিক্ষা স্কুল, এন্ডহুই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাআনসান, আনহুই, চায়নায়-ব্যাচেলর ডিগ্রি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে পড়ার সুযোগ চেয়ে আবেদন করে। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে এন্ডহুই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার আবেদন মঞ্জুর করে। আগামী ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করার আহ্বান করা হয়েছে। চার বছর মেয়াদি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে রেজিস্ট্রেশন করতে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ফি দিতে হবে।
রেজিস্ট্রেশন, পাসপোর্ট, ভিসা, বিমান ভাড়াসহ সব মিলে প্রায় ৩ লাখ টাকা লাগবে, যা দিনমজুর বাবার পক্ষে অসম্ভব।
এ বিষয়ে কিশোর কুমারের বাবা কৈলাশ চন্দ্র ও মা কিরণ জানান, আমরা খুব কষ্ট করে দিনমজুরি করে জীবন চালাই। আমাদের কোনো জায়গা জমি নেই। এতো টাকা আমরা কোথায় পাবো। ছেলের এতো বড় সুযোগ কাজে লাগাতে না পেরে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি এবং হাল ছেড়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে নামুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, তারা দরিদ্র ও অসহায়। ছেলে চীনে শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। এ দরিদ্র ছাত্রটিকে সহযোগিতা করতে আমাদের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।
কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে কথা বলতে পারেন কিশোর কুমারের (০১৭২২-৬৩৮৭৪১) সঙ্গে।
রবিউল হাসান/এমএএস/এমএস