স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে সুজনের ঘরে অবস্থান নিলেন সাথী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পাবনা
প্রকাশিত: ০৮:৪৯ পিএম, ২৯ জুন ২০১৯

স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের এক কর্মচারীর শয়ন কক্ষে অনড় অবস্থান নিয়েছেন সাবিনা ইয়াছমিন সাথী (২৫) নামের এ তরুণী। শনিবার বেলা ১১টার দিকে সুলতান মাহমুদ সুজন (৩১) নামের ওই কর্মচারীর শয়ন কক্ষে এসে হাজির হন তিনি। ওই তরুণীর দাবি, তিনি সুজনের ২য় স্ত্রী।

এদিকে অবস্থা বেগতিক দেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন সুজন। তিনি রূপপুর পৌরসভার চৌবাড়িয়ার দক্ষিণ পাড়ার আব্দুর রশিদ বাবলুর ছেলে। তার আগের স্ত্রী ও একটি সন্তান রয়েছে।

সাবিনা ইয়াছমিন সাথী জানান, গত বছরের ৯ নভেম্বর সুলতান মাহমুদ সুজনের সঙ্গে তার রেজিন্ট্রি করে বিয়ে হয়। যার রেজি. নং- ৮৮/১৮ তারিখ ৯-১১-২০১৮। পাবনা জেলা জজ কোর্ট উকিল ভবনে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। কাবিননামায় ৫ লাখ এক হাজার টাকা দেনমোহরের ধার্য করা হয়। এর মধ্যে স্বর্ণের গহনা বাবদ এক হাজার টাকার নগদ পরিশোধ করে ৫ লাখ টাকা বাকি রাখা হয়।

সুজন তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে দাবি করে ওই তরুণী জানান, তার আগে একবার বিয়ে হয়েছিল। ১ম স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় পরে তিনি ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের হারোপাড়া মহল্লার বিশ্বাসপাড়ায় বাবার বাড়িতে বসবাস করছিলেন। এক বছর আগে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের মাধ্যমে সুজনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে কর্মরত সুজন তাকে ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। এরপর থেকে তারা দুজন বিয়ে করে ঈশ্বরদীতে একসঙ্গে বসবাস করছিলেন। কিন্তু সুজন ১ম স্ত্রীর কথা গোপন করে তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের মাস ছয়েক পর বিষয়টি জানার পর ভাঙ্গুড়ায় বসবাসরত সুজনের ১ম স্ত্রী তার বিরুদ্ধে মামলা করার উদ্যোগ নেয়। এসময় সুজন সাথীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

সাথী জানান, সুজন তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে স্ত্রীর অধিকার ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেন। সব চেষ্টা বিফলে যাওয়ার পর তিনি নিরুপায় হয়ে শনিবার সুলতান মাহমুদের বাড়িতে এসে হাজির হয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সুজনের বাড়ির লোকজন তাকে ও তার মা শিল্পী খাতুনকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করার চেষ্টা করে। এসময় তিনি দৌড়ে সুজনের শোবার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে নিরাপদে আশ্রয় নেন। কিন্তু বাড়ির লোকজন তার মা শিল্পী খাতুনকে বেধড়ক লাঠিপেটা করে আহত করেছেন।

গ্রামবাসী সাথীর মাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে সাথী বাড়িতে আসার পর থেকে সুলতান মাহমুদ পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। অভিযুক্ত সুজনের বাবা আব্দুর রশিদ বাবলু বিদেশে থাকের। সুজনের ২য় বিয়ে নিয়ে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও স্বজনরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

ভাঙ্গুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর মিজানুর রহমান জানান, বিয়ের নামে প্রতারণা করেছে সুজন। ন্যায় বিচার পেতে ভুক্তভোগীকে আইনের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার এসআই রাজু আহম্মেদ জানান, সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সুজনের স্ত্রী দাবি করা সাথী এবং তার পরিবারের সদস্যদের ওপর যেন কোনো হামলা না হয় সেজন্য সুজনের পরিবারকে সর্তক করা হয়েছে।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান না হলে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ কে জামান/এমবিআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।