বাংলাদেশ এমন পর্যায়ে চলে গেছে দেখে অবাক বিশ্ব : আইজিপি
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, এদেশ আমার-আপনার এবং সবার। আমাদের জন্য স্বাধীন সার্বভৌম এদেশ এনে দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার জীবনে একমাত্র লক্ষ্য ছিল এদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করা। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে এদেশের মাটি ও মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন বঙ্গবন্ধু।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্ব আজ বাংলাদেশকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে, দেখে সমগ্র বিশ্ব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
সোমবার বেলা ১১টায় ফরিদপুর পুলিশ লাইন মাঠে মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইজিপি।
জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, যত ষড়যন্ত্রই হোক, মাদক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দিয়ে আমাদের যতই পেছনে টানার অপচেষ্টা চালানো হোক না কেন সব ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা নস্যাৎ করে এগিয়ে যাব আমরা। সবার সহযোগিতায় জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে এনেছি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের জিরো টরালেন্স নীতি অব্যাহত আছে। জঙ্গিবাদ দমনে আমরা বিশ্বে নজির স্থাপন করেছি।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলছে। টেকসই উন্নয়ন তখনই সম্ভব যখন দেশে টেকসই শান্তি বিরাজ করবে। আর টেকসই শান্তির জন্য টেকসই নিরাপত্তা প্রয়োজন। আমরা সেই টেকসই নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তবে এই টেকসই নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা অপরিহার্য। বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে, টেকসই নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা চাই। আমি বিশ্বাস করি আমরা যদি সবাই মিলে সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াই তবে বাংলাদেশে এদের কোনো ঠাঁই হবে না।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, মাদকদ্রব্য ও সন্ত্রাস দমনে শুধুমাত্র পুলিশের একার অভিযানে সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। সবাই এগিয়ে এলে সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে পারব। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই।
তিনি বলেন, আসুন আমরা সবাই মিলে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। শিক্ষক, অভিভাবক, ইমাম, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণ স্ব স্ব ক্ষেত্র থেকে মাদকের বিরুদ্ধে এগিয়ে এলে আমরা এই যুদ্ধে অবশ্যই জয়লাভ করব। মাদক নির্মূলের দায়িত্ব একা শুধু পুলিশের নয়। নিজেদের পরিবার, এলাকা, সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতি এক হাজারে একজন পুলিশ রয়েছে। এই একজন পুলিশের পক্ষে হাজার জনকে অপরাধ থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয়। এজন্য কমিউনিটি পুলিশিং। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে পুলিশের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়। জনগণই তার এলাকার খবর সব থেকে ভালো জানেন। জনগণ ও পুলিশের মাঝে সেতুবন্ধন রচনা করে কমিউনিটি পুলিশিং।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে পুলিশের মহাপরিদর্শক আরও বলেন, বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যমআয়ের ও ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে আমরা মধ্যমআয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। আমাদের এসব অর্জনে বিশ্বে আজ আমরা উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছি।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান, নবাগত জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, জেলা কমিউনিটি পুলিশ ফোরামের সভাপতি প্রফেসর মো. শাহজাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লোকমান হোসেন মৃধা প্রমুখ।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, কানাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, মাদকাসক্তি থেকে আলোর পথে আসা বোয়ালমারীর রেবেকা ও ফরিদপুর শহরের গুহলক্ষ্মীপুর বস্তির মনোয়ার হোসেন মনা।
বি কে সিকদার সজল/এএম/জেআইএম