হাসপাতালে চিকিৎসককে মারধর, জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি
বরগুনা জেনালের হাসপাতালে কর্তব্যরত এক চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমানকে মারধরের প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ধারণ করে দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বরগুনার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে ঘটনার দু’দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে এ ঘটনায় দ্রুত আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বরগুনার জেলা প্রশাসককে চিঠির মাধ্যম্যে নির্দেশ দিয়েছেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাশ।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে হাসপাতালের বহির্বিভাগে সেবা বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। তবে এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসা রোগী ও আবাসিক রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সুদীর্ঘ বছর ধরে বরগুনায় চিকিৎসক সংকট। এর মধ্যেও যে কয়জন চিকিৎসক ছিলেন তারা তাদের সাধ্য অনুযায়ী বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাতে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত এক চিকিৎসককে মারধর করায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা অতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ঘটনার দুদিন অতিবাহিত হলেও এ ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। বক্তারা ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
সমাবেশে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহবার উদ্দিন, মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সাইফুল ইসলাম শাকিল, বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল, জেলা পরিবেশ আন্দোলন কমিটির সভাপতি শুখরঞ্জন শীল, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরগুনার সাবেক সভাপতি আবদুর রব ফকির, জেলা এনজিও ফোরমের সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দীন শানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে বমি ও লো প্রেশার (নিম্ন রক্তচাপ) নিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয় আব্দুল্লাহ নামে বরগুনা জেলা স্কুলের এক শিক্ষার্থী। তাকে চিকিৎসা দেয়ার পরেও যখন তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না তখন তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান। কিন্তু রোগীর স্বজনরা তাকে বরিশাল না নিয়ে সময় ক্ষেপণ করেন। এতে একপর্যায়ে রোগী আব্দুল্লাহর মৃত্যু হলে ডা. মশিউর রহমানকে নির্মমভাবে মারধর করে স্বজনরা। এ ঘটনায় দুটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে।
ডা. মশিউর রহমানকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির হোসেন মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করছি।
সাইফুল ইসলাম মিরাজ/আরএআর/জেআইএম