ছেলের জীবন বাঁচাতে কিডনি দিলেন মা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০১:১৪ পিএম, ২২ জুন ২০১৯

সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে পারেন মা। সন্তানের জীবন বাঁচিয়ে আবারও সেটাই প্রমাণ করলেন মৌলভীবাজারের বড়লেখার সালেহা বেগম (৪৪)। ছেলের জীবন বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, নাড়িছেঁড়া ধনকে বাঁচাতে বাংলাদেশ থেকে তিনি ছুটে গিয়েছেন সংযুক্ত আরব-আমিরাতে।

সালেহা বেগম মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালা গ্রামের প্রবাসী ফখর উদ্দিনের স্ত্রী।

বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি হাসপাতালে মায়ের দেয়া কিডনি ছেলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে মা ও ছেলে দুজনেই সুস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে।

স্বজন, প্রতিবেশী ও প্রবাসী সূত্রে জানা গেছে, বেলাল আহমদ (২৮) প্রায় ৬ বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি জমান। সেখানে তিনি তার বাবার সঙ্গেই থাকেন। তিনি সেখানে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। কিন্তু বেলাল দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। কিডনি ডায়ালাইসিস করেও তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। সম্প্রতি চিকিৎসরা বেলালকে জানান তার দুটো কিডনিই একেবারে অকেজো হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন।

এদিকে বেলালের দুটো কিডনি নষ্ট হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তার মা সালেহা বেগম। এই অবস্থায় নিজের কথা চিন্তা না করে একটি কিডনি ছেলেকে দেয়ায় সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছেলের কিডনির সঙ্গে মিলে যাওয়ায় সম্প্রতি সালেহা বেগম সংযুক্ত আরব-আমিরাতে যান। অবশেষে গত ১৯ জুন আমিরাতে আবুধাবি শেখ খলিফা হাসপাতালের চিকিৎসকরা মায়ের দেয়া একটি কিডনি ছেলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হন।

বেলালের মামাতো ভাই মুহিবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, বেলালের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পরে ফুফু (বেলালের মা) তাকে একটি কিডনি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বেলালকে কিডনি দিতে ফুফু কয়েক মাস আগে দেশ থেকে এখানে এসেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় আরব-আমিরাতের একটি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে বেলালের দেহে কিডনি সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। মা ও ছেলে দুজনেই সুস্থ আছেন।

তিনি বলেন, নিজের কথা চিন্তা না করে একজন মা ছেলেকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়ে যে দৃষ্টান্ত গড়েছেন, তা সত্যিই বিরল। আসলে সন্তানের জন্য মা যে সবকিছু ত্যাগ করতে পারেন এটি তারই উদাহরণ হয়ে থাকবে।

রিপন দে/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।