মধ্যরাতে রোলার চালিয়ে রাস্তা মেরামত করলেন ডিসি
ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা পেরিয়ে ১টা ছুঁই ছুঁই। এমন সময় শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে দেখা গেল ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক (ডিসি) সরোজ কুমার নাথ শহরের চলাচলের অনুপযোগী রাস্তার গর্ত ভরাট করে নিজ হাতে রোলার চালিয়ে তা চলাচলের উপযোগী করে তুলেন। এ কাজে তাকে সাহায্য করেন ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঝিনাইদহ শহরের পোস্ট অফিস মোড়, সুইট হোটেলের সামনে ও বালিকা বিদ্যালয় সড়ক মেরামতের কাজ করতে দেখা যায় তাদের।
ডিসি ও পৌর মেয়রের এই দৃশ্য দেখার জন্য মধ্যরাতে বাড়ি ফেরা শত শত উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা যায়। রাত ১২ থেকে ৩টা পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভাঙাচোরা চলাচলের অযোগ্য এই রাস্তা মেরামত করে তারা বাড়ি ফেরেন।
এ সময় এক রিকশাচালক বলেন, শহরের রাস্তাগুলো অনেক দিন ধরে ভাঙাচোরা কিন্তু কেউ তা ঠিক করে না। এর মধ্যে রিকশা চালাতে অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু মধ্যরাতে ডিসি স্যার ও চেয়ারম্যান সাহেব নিজে হাতে রাস্তা ঠিক করেছেন দেখে অবাক হলাম আবার খুব ভালো লাগছে। এমনটা আগে কখনও দেখিনি।
মধ্যরাতে উপস্থিত হন হরিণাকুন্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসন। তিনি জানান, রোলার ড্রাইভার ও হেলপার হিসেবে জনস্বার্থে জেলা প্রশাসক এবং পৌর মেয়রের এই কাজ ব্যতিক্রমই বটে।
বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি ছয় মাস ধরে মেরামতের জন্য বলা হচ্ছে। এ নিয়ে সমন্বয় কমিটির চারটি সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু স্বার্থ না থাকায় সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এই রাস্তার কাজ করেনি। জনস্বার্থকে তারা উপেক্ষা করেছে। বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথের অনুরোধে ঝিনাইদহ পৌরসভার মালামাল ও লোকবল দিয়ে রাস্তাটি মেরামত করে চলাচলের যোগ্য করা হয়।
তিনি বলেন, রাতের বেলা রাস্তা তৈরিতে পৌরসভার অনেক হতদরিদ্র শ্রমিক স্বেচ্ছায় শ্রম দেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, আমরা রাস্তাটি মেরামত করতে ১৪ লাখ টাকার টেন্ডার করেছি। সিএস অনুমোদন হয়ে এসেছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, সরকারি কাজ করতে তো সময় লাগে। এ জন্য সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে দেরি হচ্ছে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/জেএইচ