‘টাইগার উজ্জ্বল’ এখন টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু পথযাত্রী
এক সময়ে গ্রামের হাডুডু কিংবা ফুটবল মাঠ সবখানেই দুর্দান্ত ছিল টগবগে তরুণ উজ্জ্বল শেখ (২৬)। খেলার জন্য বাইরেও ডাক পরতো। তাই পরিচিতরা তাকে ডাকতো ‘টাইগার’ বলে। আশপাশের গ্রামেও তার নাম ছড়িয়ে পড়েছিল।
তবে খেলতে গিয়ে কবে যে তার মেরুদণ্ডের হাঁড় চিড়ে যায় তা টের পায়নি। প্রায় বছর খানেক আগে মেরুদণ্ডে চিনচিন ব্যাথা হতে থাকে। কিছু দিন পর মলমূত্র ত্যাগে সমস্যা দেখা দেয়। এভাবে গত পাঁচ বছর যাবত শয্যাশায়ী সে। টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না। অথচ মাত্র দুই লাখ টাকার জোগাড় হলেই সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে সে।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার চরমেগচামী গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক শুকুর আলী শেখের দুই সন্তানের মধ্যে ছোট সে। পাঁচ বছর আগে বিয়ে করেছিল তবে কোনো সন্তান নেই। সহায় সম্বল বলতে মাত্র ৬ শতাংশের পৈত্রিক ভিটে ছাড়া আর কিছু নেই। বড় ভাই মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করে। এ অবস্থায় দরিদ্র পিতার পক্ষে উজ্জ্বলের চিকিৎসার জন্য এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব না।
বাবা শুকুর আলী শেখ জানান, উজ্জল ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেও টাকার অভাবে পড়াশোনা আর এগোয়নি। এরপর একটি জুটমিলে চাকরি নেয় সে। বছর খানেক আগে মেরুদণ্ডে ব্যাথা শুরু হলে গ্রামের চিকিৎসকের থেকে ওষুধ খাচ্ছিল। কিন্তু সাত মাস আগে অবস্থারেআরও অবনতি হলে উজ্জলকে ফরিদপুরে অ্যাপলো হাসপাতালে নিউরো সার্জন ডা. আইয়ুব আনসারীর কাছে নিয়ে যান।
চিকিৎসক জানিয়েছেন উজ্জলের মেরুদণ্ডের হাঁড় ভেঙে রগ শুকিয়ে যাচ্ছে। ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা উন্নত কোনো হাসপাতালে তার মেরুদণ্ডের অপারেশন করা গেলে আরোগ্য লাভ সম্ভব। এজন্য মাত্র দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এই চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা তাদের পক্ষে সম্ভব না।
উজ্জলের মা আছিয়া বেগম কাতরকণ্ঠে ছেলের সুচিকিৎসার জন্য সবার প্রতি সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সবাই মিলে যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে হয়তো আমার ছেলেটা আবারও সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে।
উজ্জলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এক সময়ের মাঠ কাঁপানো এই তরুণ এখন বিছানায় পড়ে আছেন। স্বজনরা সবাই তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের পরিবারে এখন চরম দুর্দিন নেমে এসেছে। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে তাকে বাঁচানো যাবে না।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দরিদ্র উজ্জলের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। তবে কেউ আর্থিক সহযোগিতা করতে চাইলে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ একাউন্টে (০১৭৮৫৯৪৩৩৩৬) টাকা পাঠাতে পারবেন।
বি কে সিকদার সজল/এমএমজেড/পিআর