দিনে-দুপুরে বাড়ি লুট, অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে লাথি
বরগুনার আমতলীতে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দিনে-দুপুরে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুট করে নিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এছাড়া এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে লাথি মেরে ফেলে দিলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ঘটনাস্থলে আমতলী থানার পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
ভুক্তভোগী পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রাওঘা গ্রামের মামুন মৃধার সঙ্গে তাদের প্রতিপক্ষ নজরুল মৃধা, আমিন চৌকিদার, সানু মৃধা ও রুহুল আমিন মৃধার জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশের মাধ্যমে এ বিবাদ মেটাতে উভয়পক্ষকে রোয়েদাদ দেন। সেই রোয়েদাদ মামুন মৃধা ও তার ভাইয়েরা মেনে নিলেও প্রতিপক্ষ মেনে নেয়নি। উপরন্তু বুধবার বিকেলে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন মামুন মৃধার বসতঘরে হামলা করে ভাঙচুর চালায় এবং বাড়ির সকল মালামাল পুকুরে ফেলে দেয়।
ভুক্তভোগী মামুন মৃধার মা মালেকা বেগম জানান, ভাঙচুরের সময় মামুন মৃধার ছোট ভাই মহিবুল মৃধার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মারিয়া বেগমকে লাথি মেরে ফেলে দিলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মারিয়া বেগম বর্তমানে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এছাড়া তার সকল স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে বসতঘরের সকল আসবাবপত্র, লেপ-তোষক, চাল-ডাল, থালা-বাসন সবকিছু পুকুরে ফেলে দেয়। আমতলী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।
একই বাড়ির শত বছরের প্রবীণ মো. নেছার উদ্দিন মৃধা জানান, মামুনের বাবা বেঁচে নেই। তাদের জমি জবরদখল করে রেখেছে প্রতিপক্ষের নজরুল মৃধা, আমিন চৌকিদার, সানু মৃধা ও রুহুল আমিন মৃধাসহ তাদের লোকজন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহীদ মৃধাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশের মাধ্যমে এ বিবাদ মেটাতে উভয়পক্ষকে রোয়েদাদ দেন। সেই রোয়েদাদ মামুন মৃধা ও তার ভাইয়েরা মেনে নিলেও প্রতিপক্ষ তা মেনে নেয়নি। উপরন্তু বুধবার বিকেলে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে তারা মামুন মৃধার বসতঘরে ভাঙচুর চালায় এবং বাড়ির সকল মালামাল পুকুরে ফেলে দেয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নজরুল মৃধা, আমিন চৌকিদার, সানু মৃধা ও রুহুল আমিন মৃধার সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদ মৃধা বলেন, দুই পক্ষের এ বিবাদ নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। যথাযথ সিদ্ধান্তও দেয়া হয়েছে। তারপরও এমন ঘটনা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।
বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে থানায় কথা বলবেন বলেও জানান।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার জানান, তিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন। এ বিষয়ে খতিয়ে দেখে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।
মো. সাইফুল ইসলাম মিরাজ/বিএ/জেআইএম