স্ত্রীর প্রেমিকের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিলেন স্বামী
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসার গ্রামের মোসলেম উদ্দিন (৫৫) নামে এক ট্রাকচালক স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করার ক্ষোভে জহিরুল ইসলাম জহির (৩৫) নামে আরেক ট্রাকচালকের শরীরে পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।
এ ঘটনার পর স্থানীয়রা মোসলেম উদ্দিনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মোসলেম উদ্দিনকে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় বেশ তোলপাড় চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দাউদকান্দি উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের রোশন আলীর ছেলে জহিরুল ইসলাম জহির ছোটবেলা থেকে নিমসার গ্রামে মামার বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। বর্তমানে ট্রাক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। কিছুদিন ধরে জহির জেলার আদর্শ সদর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের অপর ট্রাকচালক মোসলেম উদ্দিনের বাড়িতে যাওয়া-আসা শুরু করেন।
এরই মধ্যে মোসলেম উদ্দিনের স্ত্রীর সঙ্গে জহিরের পরকীয়া সম্পর্ক হয়। বিষয়টি মোসলেমের সন্দেহ হয় এবং এতে জহির ও মোসলেমের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মোসলেম উদ্দিন কৌশলে জহিরকে ডেকে নিমসার এলাকার একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের পাশের একটি হোটেলের ছাদে নিয়ে যান।
সেখানে উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মোসলেম উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে জহিরের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এ সময় জহির চিৎকার করে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এলে উপস্থিত লোকজন পানি দিয়ে আগুন নেভায়। ততক্ষণে জহিরের শরীরের বেশকিছু অংশ আগুনে দগ্ধ হয়ে যায়।
এদিকে ঘটনার পর মোসলেম উদ্দিন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে বুড়িচং থানার অধীন দেবপুর পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়।
জহিরের ভাই মো. কালা বলেন, আগুনে দগ্ধ জহিরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যায়। রাতে জহিরের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বুড়িচং থানা পুলিশের ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আগুনে জহিরের শরীর ঝলসে গেছে। তিনি চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় জহিরের ভাই মো. কালা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। গ্রেফতার আসামি মোসলেমকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মো. কামাল উদ্দিন/এএম/এমএস