সেই প্রতিবন্ধীকে ৮০০ হাঁস কিনে দেবে ছাত্রলীগ
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার শারীরিক প্রতিবন্ধী আবুল কাশেমের ৪১৩টি হাঁস বিষ দিয়ে মেরে ফেলে দুর্বৃত্তরা। রোববার বিকেলে উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের ছবিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এসব হাঁসের দেয়া ডিমের উপার্জনে শারীরিক প্রতিবন্ধী আবুল কাশেম সংসার চালাতেন। মরে যাওয়া হাঁসের বাজার মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা ছিল।
হাঁসের খামারের মালিক আবুল কাশেম বলেন, রোববার সকালে প্রতিদিনের মতো আমার ১৭০০ হাঁসকে হাওরের পরিত্যক্ত খাবার খেতে ছাড়া হয়েছিল। তখন বাড়ির খামার থেকে বেরিয়ে পাশেই অন্যের একটি পরিত্যক্ত ধানক্ষেতে কিছুক্ষণ খাবার খায় অধিকাংশ হাঁস। খাবার খাওয়ার কয়েক মিনিট পরই হাঁসগুলো মারা যেতে শুরু করে। আমার ধারণা ওই ধানক্ষেতে কেউ শত্রুতা করে বিষ দিয়ে রেখেছিল। এজন্য হাঁসগুলো এক এক করে মারা যায়।
এদিকে, এ ঘটনার পর বিষয়টি তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানান আবুল কাশেম। সেই সঙ্গে গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ চোখে পড়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের। এ অবস্থায় খামারি আবুল কাশেমের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খামারি আবুল কাশেমকে ৮০০ হাঁস কিনে দেয়ার কথা জানানো হয়।
খামারি আবুল কাশেমকে ৮০০ হাঁস কিনে দেয়ার কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের ছবিলা গ্রামের হতদরিদ্র আবুল কাশেম। শারীরিক প্রতিবন্ধী কাশেম ভাই কায়িক শ্রমের কাজ করতে পারেন না বলেই মোটা সুদে ঋণ নিয়ে হাঁসের খামার করেছিলেন ভাগ্য ফেরানোর আশায়। বিধি বাম। দুর্বৃত্তদের প্রয়োগ করা বিষে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে তার বেঁচে থাকার অবলম্বন প্রায় ৮০০ হাঁস। আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পরিবার অসহায় আবুল কাশেম ভাইয়ের পাশে দাঁড়াব। সারা দেশের লাখ লাখ ছাত্রলীগ কর্মীর মাঝে আমরা ৮০০ কর্মী যদি একটি করে হাঁসের দায়িত্ব নিই, কাশেম ভাইয়ের পরিবার আবার বাঁচার অবলম্বন পাবে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি আজ কথা বলেছি তার সঙ্গে। আমরা সবাই মিলে কাশেম ভাইয়ের পাশে থাকব। দ্রুত ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাকে ৮০০ হাঁস কিনে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর কাছ থেকে হাঁস কিনে দেয়ার আশ্বাস পেয়েছেন জানিয়ে খামারি আবুল কাশেম বলেন, ছাত্রলীগ নেতা রাব্বানী আমাকে ফোন দিয়েছেন। তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে হাঁস কিনে দেবেন বলেছেন।
নেত্রকোনা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়জুর মুর্শেদ খান অমি বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ফেসবুকে বিষয়টি আমি দেখেছি। এমন একটি কাজ করতে পারলে খুব ভালো লাগবে আমাদের। ছাত্রলীগ ইতোপূর্বে এমন ধরনের কাজ করেছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা আবুল কাশেমকে হাঁস কেনে দেয়ার ব্যবস্থা করব।
কামাল হোসাইন/এএম/এমএস