গানম্যান সঙ্গে থাকায় বিতর্কে নাছিমা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৯:৩৭ এএম, ১১ জুন ২০১৯

নির্বাচন মানেই যেন উৎসবের আমেজ। প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মিছিল-মিটিংয়ে সরগরম থাকে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকা। ভোটের হাওয়ায় ভোটারদের মাঝেও এক ধরনের আমেজ লক্ষ্য করা যায় নির্বাচনের পুরো সময়জুড়ে। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে আমেজের সঙ্গে ভোটারদের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাছিমা মুকাই আলীর ‘গানম্যান কাণ্ডে’।

গত রোববার (৯ জুন) প্রচারণা চালানোর সময় নাছিমার এক গানম্যানকে আটক করা হয়। গানম্যান নিয়ে প্রচারণা চালানোর বিষয়টি নিয়ে তাকে ঘিরে বিতর্কের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ১৮ জুন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর ভূঁইয়া (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছিমা মুকাই আলী (ঘোড়া), সৈয়দ মাঈনুদ্দিন আহমেদ (আনারস) ও মোসাহেদ হোসেন (দোয়াত-কলম)।

ধারণা করা হচ্ছে, তানভীর ভূঁইয়া ও নাছিমা মুকাই আলীর মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। বর্তমান চেয়ারম্যান তানভীর ভূঁইয়ার সঙ্গে নাছিমা মুকাই আলীকেই হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে মনে করছেন স্থানীয়রা।

নির্বাচনের আর মাত্র সাতদিন বাকি। তাই এখন প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। খাওয়া-ঘুম ভুলে ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন তারা।

এ দিকে, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকেই নাছিমা মুকাই আলীর গানম্যান নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। প্রশাসনের সঙ্গে প্রার্থীদের মতবিনিময় সভায়ও বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে উপস্থাপন করা হয়। যদিও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে নাছিমা মুকাই আলী গানম্যান নিয়েই প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।

সর্বশেষ গত রোববার (৯ জুন) নাছিমা মুকাই আলী তার গানম্যান শামীম মিয়াকে নিয়ে বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে প্রচারণা চালাতে যান। সেখান থেকে বিজয়নগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ.বি.এম মশিউজ্জামান লাইসেন্সধারী অস্ত্রসহ গানম্যান শামীমকে আটক করেন। এ সময় নাছিমার গাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়।

গানম্যান নিয়ে প্রচারণা চালানোর বিষয়টি নিয়ে ভোটারদের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নছিমার গানম্যান কাণ্ডে তাকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির বিজয়নগর উপজেলা শাখার সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী জাগো নিউজকে জানান, জনগণের ওপর যদি ওনার (নাছিমা) আস্থা না থাকে তাহলে উনি কীভাবে জনপ্রতিনিধি হবেন? নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে গানম্যান নিয়ে ঘুরা নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন। প্রশাসন এখনও পর্যন্ত নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে। আমরা আশা করছি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তবে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাছিমা মুকাই আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমাকে তো গানম্যান দিতে হবে। আমাকে তো মেরে ফেলার জন্য কতগুলো ষড়যন্ত্র করল। গাড়ি পোড়াল-গাড়ি ভাঙল। ডিসি (জেলা প্রশাসক) অফিসে ফাইনাল হয়েছে হয়তোবা আমাকে পুলিশ দেবে আর নাহয় আমাকে গানম্যানের পারমিশন দেবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মেহের নিগার জাগো নিউজকে বলেন, ওই গানম্যানকে আটক করা হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রার্থীকে কড়া সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে।

আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।