একে একে ৩৫টি ডিম দিল অজগর
দেশে অজগর সাপের ১০৭টি পর্যন্ত ডিম দেয়ার রের্কড আছে। তবে এবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে একে একে ৩৫টি ডিম দিয়েছে অজগর সাপ। ডিমগুলো দেখতে অনেকটা রাজহাঁসের ডিমের মতো।
ডিম পাড়ার পর সেই ডিমগুলো রক্ষায় সতর্ক পাহারায় রয়েছে সাপটি। পরম যত্নে কুণ্ডলী পাকিয়ে ডিমগুলো ঢেকে রেখেছে এটি। কখনও একটু নড়াচড়া করলে দৃশ্যমান হয় ডিমের স্তূপ। এর আগে ৩ বার ডিম দিয়েছে এই অজগর সাপ।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব জাগো নিউজকে জানান, শনিবার রাতে অজগরটি ডিম দেয়া শুরু করে। কতগুলো ডিম দিয়েছে তা গুনতে পারেননি কারণ ডিম পাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অজগরটি নিজেকে বৃত্তাকারে গুটিয়ে নিয়ে ডিম ঢেকে রেখেছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৫টি ডিম দিয়েছে।
বন্যপ্রাণী ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, এর আগে ওই অজগরটি প্রথম ২০০২ সালের মে মাসে ৩২টি ডিম পেড়েছিল। ডিম পাড়ার ৫৯ দিন পর ২৮টি বাচ্চা ফুটেছিল। ২০০৪ সালের ১৩ মে ৩৮টি ডিম দেয়। সেবার ৬০ দিন পর বাচ্চা ফুটেছিল ৩২টি। সর্বশেষ ২০১১ সালের মে মাসে ৩০টি ডিম দেয়।
এই অজগরটি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সীমান্তের দিনারপুর পাহাড়ের একটি লেবুর বাগান থেকে উদ্ধার করা হয়। ১৯৯৯ সাল থেকে এটি তাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এর আগে যতগুলা বাচ্চা ফুটেছে তা বনে অবমুক্ত করেছেন এবারও তাই করবেন।
ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফারা ও বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফ জাগো নিউজকে জানান, এটি বার্মিজ পাইথন যার বৈজ্ঞানিক নাম python molurus. এই অজগরের আকার ও বয়সের ওপর নির্ভর করে তার ডিমের সংখ্যা। বয়স ও আকার যত বাড়বে ডিমের সংখ্যাও বাড়বে। খাঁচায় বন্দি অবস্থায় অজগরের বাচ্চা ফুটলে একটু বেশি সতর্ক থাকতে হয়। যেহেতু বাচ্চাগুলো অনেক ছোট হয় তাই ডিম থেকে ফোটার পর তা খাঁচার নেট দিয়ে বাইরে চলে যাবে। সেই সময়টাতে বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে।
এই সাপের ১০৭টি পর্যন্ত ডিম দেয়ার রেকর্ড আছে। মার্চ থেকে জুন মাসে এরা ডিম দেয়। ডিম ফুটতে প্রায় ৬০ দিন সময় লাগে। আমাদের দেশে এই প্রজাতির সাপ চট্টগ্রাম বিভাগ, সিলেট বিভাগ ও সুন্দরবনে দেখা যায়। পাখি থেকে বড় হরিণ, ছাগল সবই তার খাদ্য তালিকায় আছে।
এফএ/এমএস