বকশিশের টাকায় মাইক্রোবাস নিয়ে ঘুরছিল ১৮ রোহিঙ্গা তরুণ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৬:৪৮ পিএম, ০৮ জুন ২০১৯
ফাইল ছবি

কক্সবাজার সদরের লিংকরোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাইক্রোবাসসহ ১৮ রোহিঙ্গা তরুণকে আটক করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাদের আটক করা হয়।

আটক রোহিঙ্গারা হলেন, নুর আহমদ, জয়নাল উতিদ্দন, মু. রফিক, পুতিক্কা, রফিক, আনোয়ার শাহ, এনায়েত উল্লাহ, রিদুয়ান, মো. শফি, মু. আয়াছ, রহিম উল্লাহ, আশেক উল্লাহ, মো. একরাম, আরাফাত, রশিদুল্লাহ, ইউনুস, রফিক ও লিয়াকত আলী। তাদের সবার বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের ভেতর।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প সূত্র জানায়, আটকরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিতে তৎপর হিসেবে নাম আসা কয়েকটি গ্রুপের মাঝে আতাউল্লাহ গ্রুপের সদস্য। কমান্ডার রশিদুল্লাহ আতাউল্লাহর সেকেন্ড ইন কমান্ড। তারা কোথায় যাচ্ছিল, কীভাবে তারা গাড়ির ব্যবস্থা করলো এবং ক্যাম্প এলাকা ও কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের একাধিক চেকপোস্ট কীভাবে পার হয়ে আসল এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার।

ওসি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশের একটি টিম রাতে লিংকরোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-জ-৪৬৭৪) জব্দ করে। ওই গাড়িতে ১৮ রোহিঙ্গা তরুণকে পাওয়া যায়। এরপরই গাড়িটি জব্দ করে থানায় নিয়ে এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে মাইক্রোবাসের চালক উখিয়ার পূর্ব কুতুপালং পাড়ার সুমন বড়ুয়া ও হেলপার কক্সবাজার সাহিত্যিকাপল্লীর মো. আমিনকেও আটক করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনা মতো তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প সূত্র জানায়, আটক রোহিঙ্গা সদস্যরা সশস্ত্রাবস্থায় ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার করে থাকে। এরা দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পে খুন, ছিনতাই, রাহাজানি, রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও অপহরণপূর্বক মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। তারা নিজেদের আরসা বা আল ইয়াকিনের সদস্য বলে পরিচয় দেয়। তারা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে গোপনে হাত মিলিয়ে উখিয়া-টেকনাফের শিবিরে ঘাপটি মেরে প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।

রোহিঙ্গারা জানায়, আটক রোহিঙ্গারা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে রিজার্ভ মাইক্রোবাস যোগে কুতুপালং শিবির থেকে রাতে বের হয়েছে। তাদের মতো কয়েকটি গ্রুপের কারণে সাধারণ রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে পারছে না। আতাউল্লাহ নামের একজন কথিত কমান্ডার এসব রোহিঙ্গাদের প্রধান নেতা হিসেবে কাজ করে আসছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন জানান, রোহিঙ্গাদের একটা তরুণ গ্রুপ ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে গাড়ি যোগে কক্সবাজার শহরের দিকে আসছে এমন তথ্য পেয়ে লিংকরোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়। একটি পুরোনো মাইক্রোবাস আটক করার পর ১৮ রোহিঙ্গা তরুণকে পাওয়া যায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ক্যাম্প থেকে নেয়া খবরে আসছে, এরা আতাউল্লাহ নামের একটি রোহিঙ্গা গ্রুপের সদস্য। আতা উল্লাহ রোহিঙ্গা এসব তরুণদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে ঈদ উপলক্ষে প্রত্যেককে একটি এমাউন্ট ঈদ বকশিশ দিয়েছে। আর এ টাকায় তরুণরা ঘুরছে। এরপরও তাদের আরও নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

সায়ীদ আলমগীর/এমএএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।