স্বামীর নির্যাতনে অবশেষে মারাই গেলেন মিম
যৌতুকের দাবিতে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্মম নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ মাহমুদা আক্তার মিম (২৮) ১৭ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে মারা গেলেন। শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান।
মারা যাওয়া মিম পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা থানার কুচিয়ামোড়া গ্রামের আব্দুল মমিন মন্ডলের মেয়ে এবং একই থানার রাজইমন্ডল গ্রামের পল্লী চিকিৎসক পিন্টু প্রামাণিকের স্ত্রী।
গত ২১ মে রাতে স্বামী পল্লী চিকিৎসক পিন্টু ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্মম নির্যাতনে মিম গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে একটি বেসরকারি হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ঈদের দুইদিন আগে তাকে আবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গত ১৭ দিনেও তার জ্ঞান ফেরেনি এবং লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টায় তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়ে চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
মিমের স্বজনরা জানান, ১০ বছর আগে রাজাইমণ্ডল গ্রামের চকির প্রামাণিকের মেয়ে মিমকে পল্লী চিকিৎসক পিন্টু প্রামাণিকের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিসহ কারণে অকারণে তাকে স্বামী পিন্টুসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ মে রাত আনুমানিক ৩টার দিকে মিমকে পিন্টুসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা নির্মম নির্যাতন করেন। মিমের বুক থেকে গলা, মুখ এবং মাথায় নির্যাতন করে থেঁতলে দেয়া হয়। তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়ায় শ্বাসনালী মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ঘটনায় মিমের বড় ভাই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে স্বামী পিন্টুসহ ছয়জনকে আসামি করে আতাইকুলা থানায় মামলা করেন। কিন্তু এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি।
আতাইকুলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মিমের মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে জানান, আসামিরা পলাতক রয়েছে। পুলিশের একাধিক টিম তাদের ধরতে মাঠে রয়েছে। যেকোনো সময় তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, আগে যে মামলা করা হয়েছে সেটি হত্যার উদ্দেশ্যে নির্যাতন উল্লেখ করায় মিম মারা যাওয়ায় নতুন করে মামলার প্রয়োজন নেই। এই ধারাতেই মামলা চলবে।
একে জামান/আরএআর/এমকেএইচ