সমুদ্র সম্পদ কাজে লাগাতে মেগা প্রকল্প নিচ্ছে সরকার
দেশের বিস্তীর্ণ সমুদ্র সম্পদকে মানুষের সার্বিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে সমুদ্র সম্পদকে রক্ষা এবং তার শতভাগ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
বুধবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য অফিস আয়োজিত ‘স্থায়ীত্বশীল সমুদ্র সম্পদ সুরক্ষা এবং ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক এক কর্মশালায় একথা জানানো হয়।
কর্মশালায় বলা হয়, বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমার পরিমাণ ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার। উপকূলীয় অঞ্চলের দৈর্ঘ্য ৭১০ কিলোমিাটর। দেশের ১৬টি জেলার ৭৫টি উপজেলার ৭৫০টি ইউনিয়ন নিয়ে সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সরকার। সেখানে সামুদ্রিক মাছের ওপর গবেষণা থেকে শুরু করে সামুদ্রিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার, জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, জেলেদের আইডি কার্ড প্রদান, পরিবেশবান্ধব ট্রলার থেকে শুরু করে মাঝি-মাল্লাদের দিয়ে সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ এবং মাছের প্রজনন বৃদ্ধিতে সহায়তাকরণ নিয়ে কাজ করা হবে। জেলেদের জন্য মাছ বিক্রির ব্যবস্থা, সাগরে নিরাপদে যাতায়তের জন্য লাইটিংয়ের ব্যবস্থাসহ জেলে পরিবারের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রেখে এ মেগা প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার।
অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশের আয়ত্তে থাকা সমুদ্রকে যথাযথ ব্যবহার করা গেলে দেশের অর্থনৈতিক কল্যাণ সাধিত হবে। এটি বাস্তবায়নে মেগা প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। চলতি ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা অবশ্যই জেলেদের চরম দুঃসময়। তা নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি জেলে পরিবারকে প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে চালসহ নানা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। যেসব জেলেদের কার্ড নেই তাদের স্থানীয়ভাবে সহায়তা করা হবে বলেও উল্লেখ করেন ডিসি।
কক্সবাজার জেলা মৎস অফিসার এস এম খালেকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুদুর রহমান মোল্লা, সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিসারিজের উপ-প্রকল্প পরিচালক অধীর চন্দ্র দাশ, সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি লে. হারুন, কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা সিকান্দার আলী, জেলা শিক্ষা অফিসার ছালাহউদ্দিন আহামদ চৌধুরী, জেলা পরিবেশ অধিদফতরের উপ পরিচালক মো. নুরুল আমিন, জেলা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার মো. শাহজাহান, জেলা বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দোলোয়ার হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহামদ, শ্রিম্প হ্যাচারি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সেব) এর সচিব এস এম বাবর, সংগঠনটির মহেশখালী প্রতিনিধি মিজানুর রহমান প্রমুখ।
কর্মশালায় বক্তারা দাবি করেন, মাছের প্রজনন বাড়াতে সাগরে অবরোধ কেবল একটি দেশ দিলে হবে না। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় রেখে অবরোধ দেয়া মঙ্গলজনক। কারণ বাংলাদেশের জেলেরা সাগরে না গেলেও প্রতিবেশী দেশের জেলেরা ঠিকই অনুপ্রবেশ করে সাগর থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায়।
রোহিঙ্গাদের মৎসজীবী কার্ড না দিতে অনুরোধ জানান তারা।
সায়ীদ আলমগীর/এমবিআর/এমএস