সরকারি খাল দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ০২:৩৮ পিএম, ২৮ মে ২০১৯

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কুমার ও আড়িয়াল খাঁ নদের সংযোগ খাল দখলের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কালামৃধা বাজারের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের বাজার অংশের পুরোটাই দখল করে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল।

দখল করে বাড়িঘর, মার্কেটসহ বহুতল ভবন তুলছেন কেউ কেউ। যে খালটি দিয়ে এক সময় ভাঙ্গার জনগণ আড়িয়াল খাঁ নদীতে নৌকায় করে যাতায়াতসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী আনা নেয়া করতেন সেই খালটি দখলদারদের কবলে পড়ে মৃত প্রায় অবস্থা।

কালামৃধা বাজার অংশের বেইলি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় একাধিক মার্কেট ও ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি সোহরাফ মাতুব্বর নামে জনৈক ব্যক্তি ব্রিজের অর্ধেক অংশ জুড়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করায় খালের মাত্র ৮/১০ ফুট জায়গা অবশিষ্ট রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে বাকি খালটুকু ভরাট করে দখল করার পাঁয়তারা করছে কতিপয় প্রভাবশালী।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, খাল দখলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন কালামৃধা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অসাধু কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনতা ভূমি অফিসে তথ্য দিলে লোকে দেখানো পরিদর্শন করে দখলদারদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ করে চুপ থেকেছেন তারা। ফলশ্রুতিতে দিনের পর দিন দখলদাররা খালটিকে দখল করে নিতে সাহস পেয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুমার নদের সঙ্গে আড়িয়াল খাঁ নদের সংযোগ খালটি কালামৃধা বাজার অংশ দিনের পর দিন দখলদাররা কৌশলে দখল করে নিয়েছে। কেউ অবৈধ ড্রেজার দিয়ে আবার কেউ ট্রাকে করে বালু এনে খালটি ভরাট করে ফেলছে। ভরাটের কিছুদিন পরেই দখলদাররা প্রথমে টিনের ঘর তোলে। এর কিছু দিনপরই সেই ঘর ভেঙে সেখানে পাকা ঘর নির্মাণ করে মার্কেট করে ফেলছে।

সম্প্রতি বাজার অংশের বেইলি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ব্রিজের অর্ধেকেরও বেশি জায়গা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন সোহরাফ মাতুব্বর নামে একজন ব্যবসায়ী। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী স্থানীয় ভূমি অফিসে অভিযোগ করলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা লোক দেখানো পরিদর্শন করে চলে যান।

এলাকাবাসী জানায়, শত বছরের পুরোনো খালটি দুইটি নদীর সঙ্গে সংযোগ ছিল। দখলদারদের কবলে পড়ে তা আজ বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে। কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টো অভিযোগ করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে শত্রুতা তৈরি হচ্ছ। একই সঙ্গে অভিযোগের কারণে ভূমি অফিসের লোকজনের পকেট ভারি হচ্ছে। অবিলম্বে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী খালটিকে দখলমুক্ত করবেন বলে প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

এদিকে খাল দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণকারী সোহরাফ মাতুব্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিমাদ্রী খিসা বলেন, সরকারি খাল দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বি কে সিকদার সজল/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।