ছুটি ছাড়াই দেড় মাস কর্মস্থলে নেই চিকিৎসক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ০৬:৫০ পিএম, ২৭ মে ২০১৯

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলায় আগাম অসুস্থতার ছুটি নিয়ে দেড় মাস ধরে লাপাত্তা ডা. আকাইপ্রু চৌধুরী। আগাম অসুস্থতার কারণে দেখিয়ে দেড় মাস ছুটি নেয়ার বিষয়টি দেখে অবাক সবাই।

তবে আগাম অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটির আবেদন করলেও তাতে অসঙ্গতি থাকায় ডা. আকাইপ্রু চৌধুরীকে ছুটি দেয়া হয়নি বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তবে চাকরি বিধিমালা ভঙ্গ করে দিনের পর দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ডা. আকাইপ্রু। মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একাধিকবার তাকে উপস্থিত থাকতে বললেও পাত্তা দেননি তিনি।

ডা. আকাইপ্রুর এমন ফাঁকিবাজিতে চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন দুর্গম পাহাড়ি জনপদের সেবাপ্রার্থীরা। রোগীদের বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন-চার মাস আগে রাঙ্গামাটি থেকে বদলি হয়ে মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন ডা. আকাইপ্রু চৌধুরী। গত ২ এপ্রিল থেকে হাসপাতালে তিনি অনুপস্থিত থাকলেও আগাম শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে ২১ এপ্রিল থেকে ছুটি চেয়ে ১৮ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর ছুটির আবেদন করেন। আবেদনে আগাম অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটির আবেদনে বিস্মিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ১৪টি পদ থাকলেও কর্মরত পাঁচজন চিকিৎসক। এর মধ্যে ডা. রিপন মণ্ডল খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে প্রেষণে রয়েছেন। হাসপাতালের একমাত্র গাইনি চিকিৎসক ডা. নাজনীন সুলতানা সপ্তাহে মাত্র দুদিন হাসপাতালে আসেন। একমাত্র চিকিৎসক হিসেবে ডা. তনয় তালুকদার একাই চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মিত সেবার প্রদানের পাশাপাশি কোনো জরুরি রোগী এলেও তাকে চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। ফলে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।

কর্মরত থাকার পর হাসপাতালে না আসাটা দুঃখজনক মন্তব্য করে মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিছবাহুল আলম বলেন, ডা. আকাইপ্রু চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত। তার অনুপস্থিতির কারণে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে জানতে ডা. আকাইপ্রু চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

দিনের পর দিন ডা. আকাইপ্রু চৌধুরীর অনুপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার করে খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন মো. ইদ্রিস মিঞা বলেন, সম্প্রতি মহালছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে গিয়েও তাকে অনুপস্থিত পাওয়া গেছে। এর আগেও তাকে অনুপস্থিতির জন্য মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।