লাথি মেরে চিকিৎসকের চেম্বার ভেঙে ফেললেন যুবলীগ নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী
প্রকাশিত: ০৮:৫৭ পিএম, ২২ মে ২০১৯

রোগীর সিরিয়াল পেতে দেরি হওয়ায় রাজশাহীর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের চেম্বার ভাঙচুর করেছেন এক যুবলীগ নেতা। জেলা যুবলীগ সভাপতি আবু সালেহর নেতৃত্বে মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসকের চেম্বার ভাঙচুর করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চারঘাট এলাকার এক রোগীকে লক্ষ্মীপুর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বেলাল হোসেনের চেম্বারে পাঠান যুবলীগ নেতা আবু সালেহ। এজন্য ওই চিকিৎসককে ফোনও দেন সালেহ। ফোন করে চিকিৎসক বেলাল হোসেন কয়েক মিনিট অপেক্ষার জন্য তাকে অনুরোধ করেন।

ইফতারের ঠিক আগমুহূর্তে ১৪-১৫ সহযোগী নিয়ে নিজেই চিকিৎসক বেলাল হোসেনের চেম্বারে হাজির হন আবু সালেহ। তার রোগীকে কেন বসিয়ে রাখা হয়েছে জানতে চেয়ে সিরিয়ালের দায়িত্বে নিয়োজিত চিকিৎসকের কর্মচারী শিমুলের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান সালেহ। একপর্যায়ে শিমুলকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন আবু সালেহ।

আহত শিমুল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অন্য কর্মচারীরা তাকে রক্ষায় এগিয়ে যান। এ সময় ওই যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীরা তাদের এলোপাতাড়ি মারপিট করেন।

সেই সঙ্গে বাইরে থেকে চিকিৎসকের চেম্বারের দরজায় লাথি মারেন আবু সালেহ। অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেন চিকিৎসককে। পরে সহযোগীদের নিয়ে সেখানকার ম্যানেজার শামীম হোসেনের চেম্বারে যান। শামীম না থাকায় তার চেম্বারেও ভাঙচুর চালান যুবলীগ নেতা। মারধর করেন সেখানকার দুই কর্মীকে। প্রায় ২৫ মিনিট তাণ্ডব চালিয়ে সহযোগীদের নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ছেড়ে যান আবু সালেহ।

এ বিষয়ে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার শামীম হোসেন বলেন, যুবলীগ নেতার তাণ্ডবের সময় পুরো হাসপাতালজুড়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর আহত শিমুলসহ পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি রাজশাহীর মেয়রকে আমরা জানিয়ে বিচার দাবি করেছি।

জানতে চাইলে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বেলাল হোসেন বলেন, যুবলীগ নেতার সুপারিশ করা রোগীকে আগে কয়েকবার দেখা হয়েছে। চেম্বারের ভেতরে কয়েকজন শিশু রোগী থাকায় যুবলীগ নেতার রোগীকে মাত্র ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। হামলার সময় তার রোগী চেম্বারের ভেতরে ছিলেন। এরই মধ্যে দলবল নিয়ে এসে লঙ্কাকাণ্ড ঘটান ওই যুবলীগ নেতা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান। তবে এ নিয়ে কোনো অভিযোগ না পাওয়ার কথা জানান তিনি। অভিযোগ পেলে আইনত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান ওসি।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে কয়েক দফা চেষ্টা করেও রাজশাহী জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহর মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।