টার্কি মুরগিতে স্বপ্ন দেখিয়ে ১৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও

সফিকুল আলম
সফিকুল আলম সফিকুল আলম , জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৬:১০ পিএম, ২১ মে ২০১৯

পঞ্চগড়ে টার্কি মুরগি পালনের মাধ্যমে আর্থিক সচ্ছলতা এবং লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে স্বপ্নতরী এগ্রো সার্ভিসেস টার্কি ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় প্রায় চারশ মানুষের কাছ থেকে কৌশলে প্রতিষ্ঠানটি এই অর্থ আদায় করে লাপাত্তা হয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের দাবি, স্বপ্নতরী এগ্রো সার্ভিসেস টার্কি ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেড নামে কোম্পানিটি টার্কি মুরগি প্রতিপালন প্রকল্পের মাধ্যমে ৯০ দিনে লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখায়। শুরুতে স্থানীয় অনেকে বিভিন্ন মূল্যে তাদের প্রকল্পের প্যাকেজ নিয়ে লাভের মুখ দেখেন। পরে অতিরিক্ত লাভের আশায় লভ্যাংশসহ আরও মূলধন বিনিয়োগ করেন। অনেকে মুরগি পালন ছাড়াই লাভের আশায় টাকা দেন। তাদের কথা বিশ্বাস করে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকার বেকার যুবক, কৃষক, ব্যবসায়ী এবং নারী প্রায় ১৩ কোটি টাকা তাদের হাতে দেন।

এদের অনেকে এনজিওর ঋণ অথবা জমি বিক্রি বা বন্ধক দিয়ে এখন পথে বসেছেন। এই প্রতারক চক্রের মূলহোতা কোম্পানির চেয়ারম্যান মানিক চন্দ্র বর্মন। শুরুতে তিনি সবার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করলেও কয়েকদিন ধরে তার ব্যবহৃত ফোন বন্ধ রয়েছে। এখন তাকে কেউ খুঁজে পাচ্ছে না। প্রতারিত একাধিক মুরগির খামারি ইতোমধ্যে মানিক চন্দ্র বর্মনসহ কোম্পানির নামে মামলাও করেছেন।

Panchagarh-Tarky-Protarona

এ নিয়ে মঙ্গলবার সকালে জেলা শহরের শেরে বাংলা পার্ক মোড়ের পঞ্চগড়-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। পরে ক্ষতিগ্রস্তরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেন।

জেলা শহরের রাজনগর এলাকার সেনাসদস্য জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী মৌসুমী পারভীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন প্রত্যেকটি বাড়ি একটি করে খামার হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এজন্য আমরা টার্কি মুরগির খামার করতে তাদের সহযোগিতা নিয়েছি। মুরগি পালনের প্রকল্প নিতে বছর খানেক আগে তাদের দুই লাখ টাকা দিয়েছি। এখন শুনছি তারা ভুয়া কোম্পানি। এখন আমরা কি করব, কোথায় যাব। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে এর একটি ব্যবস্থা করবে।

রজলীপাড়া মহল্লার মোশারফ হোসেন বলেন, জমি ও গরু বিক্রয় করে ১৫টি প্যাকেজের জন্য কোম্পানিকে ৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা দিয়েছি। প্রথমে এক লাখ টাকার মুরগি দিলেও পরে আর দেয়নি এবং টাকাও ফেরত দেয়নি। মানিক চন্দ্র বর্মন আমার মতো অনেক মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়েছেন।

সফিকুল আলম/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।