একে ডান দিকে হৃদপিণ্ড, তাতে আবার ছিদ্র

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ১২:২৫ পিএম, ১৬ মে ২০১৯

কুড়িগ্রামে হতদরিদ্র পরিবারের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নীতু চন্দ্র দাস (১৪)। তার হার্ট বা হৃদপিণ্ড আর দশজনের মতো বাম দিকে না হয়ে ডান দিকে রয়েছে। তবে বিরল এই ঘটনার ভাগিদার নীতুর হার্টটি জন্মগতভাবে ছিদ্র হওয়ায় এখন সে মৃত্যুমুখে। ছোট্ট চা-বিস্কুটের দোকানি বাবা গোবিন্দ দাসের পক্ষে ছেলের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা সাধ্যের বাইরে। চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনের তাগিদ দিলেও চিকিৎসার ব্যয় প্রায় ২ লাখ টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব না তার পরিবারের পক্ষে। ফলে অসহায় এই পরিবারটি তাকিয়ে আছে সরকারি প্রশাসনসহ বিত্তবানদের দিকে।

কুড়িগ্রাম শহরের কালিবাড়ি মন্দিরের পেছনের গলিতে চা ব্যবসায়ী গোবিন্দ চন্দ্র দাস জানান, জন্মগতভাবে ছেলের হার্টটি ডানদিকে অবস্থিত। জন্মের পর থেকেই দুর্বল ছিল সে। একটু পরিশ্রম করলেই হাঁফিয়ে উঠত। টাকা-পয়সার অভাবে ভালো ডাক্তার দেখানো সম্ভব হয়নি। ফলে স্থানীয় ডাক্তারদের চিকিৎসায় চললেও তার সমস্যা দিনদিন যেন বেড়েই যাচ্ছিল। পরে ২০১৮ সালে রংপুরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ঢাকার জাতীয় হ্নদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (কার্ডিওলোজি) ডা. মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে দেখালে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার হার্টটি শরীরের ডানদিকে রয়েছে এবং সেটিতে ছিদ্র থাকার কারণে তাকে দ্রুত ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে অবস্থিত নারায়ণা হৃদরোগ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দেন।

কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার খানপাড়ায় একটি পুরোনো আধাপাকা ঘরে বসবাস পরিবারটির। দুই শতক জমিতে অবস্থিত এই বাড়িটিই তাদের শেষ সম্বল। ছেলে নীতু চন্দ্র দাস (১৪) অর্থনৈতিক কারণে খালাত বোনের কাছে থেকে জেলার চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নে অবস্থিত রাধাবল্লভ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে। ছোট বোন নীলা রানী দাস (৯) কুড়িগ্রাম ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

Kurigram-Huart-Futo

নীতু চন্দ্র দাসের মা মিনা রানী দাস জানান, জন্মের পর থেকেই ছেলেটি দুর্বল ছিল। এখন সারাক্ষণ বুক ধড়ফড় করে, নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, পীঠের মধ্যে শব্দ হয়। একটু খেলেই বমি করে ফেলে। এই সন্তানকে নিয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি। ইতোমধ্যে তার চিকিৎসার জন্য দুটি বেরসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫৮ হাজার টাকা ঋণ করা হয়েছে। যা রংপুরে চিকিৎসা করতে শেষ হয়ে গেছে। এখন আমাদের কাছে কোনো টাকা-পয়সা নাই। আমরা এই সন্তানকে কিভাবে বাঁচাব? এখন সবার সহযোগিতা ও কল্যাণে সন্তানটি পৃথিবীতে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. এস.এম আমিনুল ইসলাম জানান, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা যেতে পারে। এছাড়াও সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে পরিবারটিকে অর্থ সহায়তা দেয়া যাবে।

নাজমুল হোসেন/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।