ফণীর আঘাতে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বিদ্যালয়
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি বিশখালী নদীর ভাঙনে বিলীন হতে চলছে। ইতোমধ্যে মধ্যে বিদ্যালয়ের পূর্বপাশের অংশটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙন অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় পুরো বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে যাবে। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া। বিদ্যালয় সংলগ্ন আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা তাদের আবাসন ও সন্তানদের লেখা পড়ার বিষয়ে চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে পানি বাড়ায় বর্ষা মৌসুম আসার আগেই বিশখালী নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। তীব্র ভাঙনে বাদুরতলা লঞ্চ টার্মিনাল ও এর আশপাশের এলাকার সড়ক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাদুরতলা বাজারের বেশির ভাগ স্থান এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি, একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাদুরতলা জামে মসজিদসহ বেশ কিছু স্থাপনা।
মঠবাড়ী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পূর্বপাশের অংশ ও বাদুরতলা-পুখরীজানা-মানকিসুন্দর সড়কটি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া বাদুরতলা-চল্লিশকাহনিয়া সড়কটিও নদীতে ভেঙে গেছে। এতে ওই সব গ্রামের হাজারো মানুষ বিপাকে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাথী আক্তার জানায়, বিদ্যালয়টি ভেঙে গেলে আমাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে। সামনে আমাদের এসএসসি পরীক্ষা। তাই বিদ্যালয়টি রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া একান্ত প্রয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইউব আলী বলেন, বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য একাধিকবার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হায়দার খান বিদ্যালয়ের জন্য অন্যত্র জমি কেনার চেষ্টা করছেন।
মঠবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল সিকদার বলেন, বিদ্যালয়টি বাঁচাতে ও বিশখালীর ভাঙন বন্ধ করতে আমরা বহুবার প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্বারস্থ হয়েছি। তবে দুঃখের বিষয়, এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আমরা বিদ্যালয়টি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা করছি। তবে অর্থাভাবে তা এখনো সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ হাওলাদার বলেন, ভাঙন থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বিদ্যালয়টি রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
আতিকুর রহমান/এএম/জেআইএম