ঝলমলে রোদেও খুলনায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক খুলনা
প্রকাশিত: ০৯:০৮ এএম, ০৩ মে ২০১৯
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে খুলনার আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গেলেও শুক্রবার সকাল থেকে রোদ ঝলমল করছে। অন্যদিকে ভ্যাপসা গরম কেটে দখিনা বাতাস ক্রমে জোরালো হচ্ছে। ভোরে সামান্য বৃষ্টিও হয়েছে।
তবে আবহাওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক থাকলেও সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে উপকূলের মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বে থাকা কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. জাফর রানা শুক্রবার জানান, এখনও কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। উপজেলার আবহাওয়া এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। তারপরও সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে ১২৬ সদস্যের ৭টি টিম অল্প সময়ের মধ্যে মাঠে নেমে পড়বে। মানুষকে নিরাপদে নিতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও জানান উপজেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের এই কর্মকর্তা।
সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা থাকায় কয়রা উপজেলার জনসাধারণ নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে যেতে শুরু করেন। বিশেষ করে কয়রা সদর ইউনিয়নের ৩, ৪, ৫ ও ৬নং কয়রা সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে এবং উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের জনসাধারণ নিজেদের জানমাল রক্ষার্থে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছাতে শুরু করেন। সকালে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে তাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়রায় মানুষের মধ্যে এখনও আতংক বিরাজ করছে। কারণ অমবশ্যার গোন (সময়) হওয়ায় নদীতে দেড় থেকে দুই ফুট পানি বেড়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, আইলার আগে যেমন তীব্র গরম অনুভূত হয়েছিল, এবারও তেমন মনে হচ্ছে। আর অমাবশ্যার গোন হওয়ায় তারা বাঁধ ভাঙন ও বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।
অপরদিকে খুলনার দাকোপ উপজেলার মানুষ জানে একটা ঝড় আসছে, তবে কেমন বড় বা কী হতে পারে তা নিয়ে ধারণা নেই। সচেতনরা বলছেন পরিস্থিতি বুঝে চিন্তা করবেন। অনেকে বলছেন, ঝড় আসলে কী করার আছে। মাঝে মাঝেই তো আসে।
এদিকে জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দার বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে জেলার ৩২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় ১ হাজার ৯৫ জন ও দাকোপ উপজেলায় ১ হাজার ৩৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবকসহ ২ হাজার ৪৬০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি এবং ৯ উপজেলায় ৯টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনকে সতর্ক করতে উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দিতে ১১৪টি মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আলমগীর হান্নান/এফএ/এমকেএইচ