সমুদ্রে জোয়ারের পানি বেড়েছে কয়েক ফুট
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৩:০৩ পিএম, ০২ মে ২০১৯
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সমুদ্রে বিপদ সংকেত বাড়লেও পুরো কক্সবাজার জেলায় বৈশাখের দাবদাহ চলমান রয়েছে। তবে সমুদ্রে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেড়েছে বলে জানিয়েছেন উপকূলীয় লোকজন।
এদিকে অস্বাভাবিক আকার ধারণ করে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় কঠোর প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ৩ মে (শুক্রবার) বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে এমন ধারণায় ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৩৮টি সাইক্লোন শেল্টার। মজুদ রাখা হয়েছে ৪০০ মেট্রিক টন জিআর চাল ও সাড়ে ৪ হাজার প্যাকেটজাত শুকনো খাবার। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৯টি মেডিকেল টিম।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আশরাফুল আফসার জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের পাশাপাশি উপজেলা ও উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছে নির্দেশনা।
তিনি আরো জানান, প্রায় ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটি। দুর্যোগ ব্যবস্থা কমিটিগুলোকে সতর্ক রাখা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ঘর করে দিতে ১১৪ বান্ডিল ঢেউটিন ও ২ লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
জেলা সদরসহ উপজেলা ও উপকূলের প্রায় ৫৩৮টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। এতে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। জেলা শহরে স্কুলসমূহও শেল্টার হিসেবে ব্যবহারে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উপকূলে মাইকিংসহ সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হবে। দূর্যোগ কবলিত মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে ১০০ যানবাহন রিকুইজিশন করছে জেলা প্রশাসন।
এছাড়াও জেলার উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সদরে ৬টি ফায়ার ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে ৩৬ দমকলকর্মী কাজ করবেন। তাদের সঙ্গে সংযুক্ত করা রয়েছে আরো ২০০ কর্মী।
ডিসি জানান, উপকূলের পাশাপাশি উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্ষয়ক্ষতি রোধে নেয়া হয়েছে একইরকম প্রস্তুতি। তাদের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা দ্রুত মেরামতের প্রস্তুতি নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে কক্সবাজার ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনারের সঙ্গে আলাদাভাবে জরুরি সভা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে ঘূর্ণিঝড় ফণী কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ২৫ কি.মি. ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ৬৫ কি.মি., মোংলা বন্দর থেকে ৯১৫ কি.মি. এবং পায়রা বন্দর থেকে ৯২৫ কি.মি. দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘণিভূত হয়ে ৩ মে সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/পিআর