নারীর গায়ে কনুই লাগার প্রতিবাদ করায় ১৭ শ্রমিক ছাঁটাই
সাভারের আশুলিয়ার একটি কারখানায় এক নারী শ্রমিককে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। পরে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় কারখানা থেকে ১৭ জন শ্রমিককে ছাঁটাই ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগও উঠেছে কারখানা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে।
শ্রমিক ছাঁটাই করার ঘটনায় ইতোপূর্বে প্রথমবার বসা অনশনে প্রশাসন সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কোনো কার্যকরী ফলাফল না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় আবারও আমরণ অনশনে বসেছে শ্রমিকদের একটি অংশ।
সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় সাভারের আশুলিয়া প্রেসক্লাব চত্বরের সামনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন তারা।
অনশনরত শ্রমিকরা জানান, ১৮ মার্চ আশুলিয়ার ইউনিক এলাকার ডংলিয়ন ফ্যাশন বিডি লি: কারখানার এপিএম জহিরুল এক নারী শ্রমিককে যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এবং জহিরুলের শাস্তির দাবি জানায়। এরপরে বিপাকে পরে যায় কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর ফলে গত ৯ এপ্রিল একত্রে ১৭ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে কারখানার কর্তৃপক্ষ। পরে বাকিদেরও দফায় দফায় ভয়ভীতি দেখানো হয়। এমনকি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন।
এ ঘটনায় প্রতিবাদ করায় তানিয়া আক্তার (২৫) নামের এক নারী শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। তিনি জানান, আমাদের এক সহকর্মীকে কারখানার এপিএম জহিরুল যৌন হয়রানি করায় আমরা এর প্রতিবাদ করে বিচার চাই। এর প্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ জহিরুলের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি বরং আমাদের ১৭ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে দেয়। জহিরুলের আগের দুটি কর্মস্থলেও তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।
তানিয়া আরও জানান, আমদের আরেক সহকর্মীকে এপিএম জহিরুল, লাইন-চিফ কবির, সুপারভাইজার রনজু ও অফিস সহকারী নীরব আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় জোরপূর্বক একটি ফাঁকা বাসায় নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শ্রমিকদের পক্ষ থেকে গত ২৩ মার্চ আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। কারখানাটির এডমিন ম্যানেজার রফিক জানান, ঘটনাটি সত্য নয়। এটি বানোয়াট এবং বানানো একটি অভিযোগ মাত্র।
অভিযুক্ত এপিএম জহিরুল বলেন, ঘটনাটি পুরোপুরি মিথ্যা। আমাদের টয়লেটের রাস্তাটা একটু সরু। টয়লেটে যাওয়ার পথে আমার হাতের কনুইটা ওই মেয়ের বুকে লাগে। হাতের কুনই বুকে লাগা তো যৌন হয়রানি হতে পারে না। তারা শুধু শুধু কেন এমন করছে, তা আমি জানি না।
এমএএস/পিআর