পোশাক শ্রমিকের আত্মহত্যা, ধর্ষণের স্বীকারোক্তি উবার চালকের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০১:৫৯ এএম, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

নগরের আগ্রাবাদে বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার উবার চালক মো. বাদশা (২৪) তাকে ধর্ষণের কথা আদালতে স্বীকার করেছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. সফি উদ্দিনের আদালতে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে সে। এর আগে শনিবার (২৭ এপ্রিল) গভীর রাতে শহরের পাঠানটুলি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নিহত নারী পোশাক শ্রমিকের বাসা নগরের মোগলটুলি এলাকায়। তিনি আগ্রাবাদে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। এছাড়া অভিযুক্ত বাদশার বাসা নগরের পাঠানটুলি এলাকায়।

পুলিশ জানায়, গত ২৪ এপ্রিল সকালে মোগলটুলির বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ওই নারী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। এরপর তার বোন ডবলমুরিং থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, বাদশা নিয়মিত মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করত। ক্রমাগত যৌন নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে তার বোন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।

এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বাদশা রোববার (২৮ এপ্রিল) আদালতকে জানায়, আগে সে ও ওই পোশাক শ্রমিক একই কারখানায় কাজ করতেন। তাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বছর খানেক আগে বাদশা পোশাক কারখানার চাকরি ছেড়ে দেয়ার পর উবারে প্রাইভেট কার চালাতে শুরু করে। এর পরও মেয়েটির সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল।

বাদশা আরও জানিয়েছে, গত ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় পোশাক কারখানা ছুটির পর সে ওই নারীকে প্রাইভেট কারে নিয়ে বেড়াতে বের হয়। একপর্যায়ে নির্জন একটি স্থানে নিয়ে তাকে গাড়ির ভেতরে দুইবার ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটি জ্ঞান হারায়।

ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহির হোসেন জানান, মৃত্যুর আগে স্বজনদের কাছে ধর্ষণের শিকার হওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। যৌন হয়রানির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। ধর্ষণের পর বাদশা ও তার মা মিলে মেয়েটিকে নিয়ে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসক মেয়েটির শরীর দুর্বল উল্লেখ করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়। বাদশা ও তার মা মেয়েটিকে নিয়ে নিজেদের বাসায় যায়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে রাত দেড়টার দিকে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করে বাদশা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে মেয়েটির ভগ্নিপতি হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নিয়ে যান। পরদিন সকালে বোন কর্মস্থলে যাওয়ার পর একা বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সে।

তিনি আরও জানান, বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে মেয়েটি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। ২৪ এপ্রিল তার বোন ডবলমুরিং থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

আবু আজাদ/এমএমজেড

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।