ক্লাসের ভেতরেই দুই শিক্ষিকার মারামারি
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় স্কুল চলাকালীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষিকার মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুজনই আহত হয়েছেন।
বুধবার দুপুরে উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের ডিগ্রি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। মারামারির ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদেজা বেগম চৌধুরী ও সহকারী শিক্ষিকা হাসনা বেগমের মধ্যে বেশ কয়েক দিন থেকে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ নিয়ে উভয়ই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষিকা খাদেজা চৌধুরীর সঙ্গে সহকারী শিক্ষিকা হাসনা বেগমের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুজন মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এতে আহত হন দুজনই।
এ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এলাকাবাসী দ্রুত জকিগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রধান শিক্ষিকা খাদেজা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পাশাপাশি হাসনা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন।
সহকারী শিক্ষিকা হাসনা বেগম বলেন, ‘আমি প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আগে শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। তদন্তে আমার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বুধবার আমি বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে হাজিরা দিতে গেলে প্রধান শিক্ষিকা আমাকে হাজিরা দিতে দেননি। এর প্রতিবাদ করলে আমাকে মারপিট করেন তিনি।’
প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা বেগম বলেন, সহকারী শিক্ষিকা হাসনা বেগম গত ১৭ এপ্রিল ছুটি ছাড়াই স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন। ২৩ এপ্রিল একইভাবে অনুমতি না নিয়ে তিনি বিদ্যালয় ছুটির পূর্বেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। আমি শিক্ষক হাজিরা খাতায় তার অনুপস্থিত দেই। বুধবার হাজিরা খাতায় হাসনা বেগম অনুপস্থিতি দেখে অফিস কক্ষের টেবিল থেকে আমার মোবাইলটি কেড়ে নেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি আমাকে বেধড়ক মারপিট করেন।
এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সহকারী শিক্ষিকা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে নিজের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বিউটি পার্লারে সময় দেন সহকারী শিক্ষিকা।
জকিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, মারামারির খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোর আগেই মারামারি থেমে যায়। আহত দুই শিক্ষিকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিরেন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে টেলিফোনে মারামারির ঘটনাটি জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ বলেন, শিক্ষকদের এ ধরনের দ্বন্দ্ব অপ্রত্যাশিত। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে এর প্রভাব পড়বে। বিষয়টি তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছামির মাহমুদ/এএম/জেআইএম