মান্নান রাহীর স্বীকারোক্তি : অনন্ত হত্যাকাণ্ডে ৫ জন ছিলাম


প্রকাশিত: ০২:৪১ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া মান্নান ইয়াহিয়া ওরফে মান্নান রাহী।

বুধবার ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫ ঘণ্টা সিলেট মহানগর হাকিম ৩য় আদালতের বিচারক আনোয়ারুল করিমের কাছে ১৬৪ ধারায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় রাহী।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মান্নান রাহী আদালতকে জানায়, ১২ মে অনন্ত বিজয় দাশ হত্যায় সে-সহ ৫ জন সরাসরি অংশ নেয়। এর মধ্যে দুইজন অন্তকে কোপায় আর তিনজন ছিলো প্রটেকশনে। মান্নান রাহী প্রটেকশনে ছিলো দাবি করে তার সঙ্গে থাকাদের নাম পরিচয় প্রকাশ করে। ইসলামবিরোধী লেখালেখির জন্যই অনন্তকে হত্যা করা হয় বলে আদালতকে জানায় মান্নান রাহী।

এর মধ্যে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবুল খায়েরও ছিলো। মান্নান রাহীও ওই বিশ্ববিদ্যায়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র। আবুল খায়ের ও রাহীর গ্রামের বাড়ি একই জায়গায়। এই আবুল খায়েরকে বুধবার ভোরে সিলেট শহরতলির টুকের বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

মান্নান রাহীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার কথা নিশ্চিত করে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মির্জা আবদুল্লাহ হেল বাকী রাতে জাগো নিউজকে বলেন, রাহী আদালতে আবুল খায়েরসহ ৫ জন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়ার কথা জানিয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আবদুল্লাহ হেল বাকী বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৫ জনের মধ্যে আবুল খায়ের ও মান্নান রাহী আটক রয়েছে। বাকি তিনজন পলাতক রয়েছে। এদেরও গ্রেফতারে সিআইডি চেষ্টা করছে। জবানবন্দি দেয়ার পর মান্নান রাহীকে আদালতের নির্দেশে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার (২৮ আগস্ট) ভোরে সিআইডির একটি দল সিলেটের কানাইঘাটে অভিযান চালিয়ে উপজেলার পূর্ব পালজুর গ্রামের হাফিজ মইনুদ্দিনের ছেলে মান্নান ইয়াহিয়া ওরফে মান্নান রাহী ও তার ভাই মোহাইমিন নোমান ওরফে এএএম নোমানকে আটক করে।

এরপর অনন্ত হত্যা মামলায় দুই ভাইকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে বুধবার আদালতে অনন্ত বিজয় হত্যার দায় স্বীকার করে মান্নান রাহী। যে ফেসবুকে বিভিন্ন ছদ্মনামে লিখতো। তবে রাহীর ভাই মোহাইমিন নোমান ওরফে এএএম নোমান দায় স্বীকার করেনি। তাকে ফের রিমান্ডে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী।

হত্যার দায় স্বীকার করা মান্নান রাহী (২৪) শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বিবদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ছিল। তবে স্নাতক শেষ না করেই পড়াশোনা ছেড়ে দেয় সে। অনন্ত বিজয় দাশও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।

গত ১২ মে নগরীর সুবিদবাজারে নিজ বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে। হত্যাকাণ্ডের পরপরই অনন্তর বড়ভাই রত্মেশ্বর দাশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে। পেশায় ব্যাংক কর্মকর্তা অনন্ত সিলেট গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী ও মুক্তমনা ব্লগের ব্লগার ছিলেন।

এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।