হাসপাতালের ১৩ কোটি টাকা লুটপাট, সিভিল সার্জনের অফিস ঘেরাও
সাতক্ষীরায় স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বরাদ্দের ১৩ কোটি টাকা লুটপাটের প্রতিবাদ ও ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচার দাবিতে সিভিল সার্জনের অফিস ঘেরাও করেছে নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ।
‘স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন চাই, ১৩ কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম লোপাটের বিচার চাই’ স্লোগান দিয়ে বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের অফিস ঘেরাও করে তারা। তবে এ সময় গেট বন্ধ করে ঘেরাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় পুলিশ।
জেলা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ বুধবার এ কর্মসূচি পালন করে। এ সময় বিক্ষোভ করেছে তারা। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক ফাহিমুল হক কিসলু, সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান মাসুম, সাবেক পিপি ওসমান গণি, জাসদের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ওবায়দুস সুলতান বাবলু, জেএসডির জেলা সভাপতি সুধাংশ শেখর, মুক্তিযোদ্ধা সুভাস সরকার ও সিনিয়র সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রমুখ।
বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রপাতি ও মালামাল কেনার জন্য ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। কিন্তু মালামাল ও যন্ত্রপাতি না কিনে সাতক্ষীরার তৎকালীন সিভিল সার্জন তাওহিদুর রহমান তার অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর যোগসাজশে মালামাল কেনা হয়েছে মর্মে মিথ্যা প্রত্যয়ন দেয়। সেই সঙ্গে সরকারি কোষাগার থেকে ১৩ কোটি টাকা তুলে লুটপাট করে তারা। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি তদন্ত দল সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসে উপস্থিত হয়ে মালামাল ও যন্ত্রাংশ দেখতে চাইলে দেখাতে পারেনি তারা। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়।
বক্তারা আরও বলেন, মালামাল বুঝে নেয়ার জন্য গঠিত সার্ভে কমিটির তিন চিকিৎসক জানিয়েছেন তাদের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। লিখিতভাবে বর্তমান সিভিল সার্জনকে বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন তারা।
তারা আরও বলেন, এখানে মানুষ সেবা পায় না। ডাক্তাররা রোগীদের হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিজের ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে নিয়ে গলা কাটা ফি আদায় করেন। হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন অকেজো। ইসিজি মেশিনে ভালো ফল আসে না। হাসপাতালে বিরাজ করছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। সরকারি ওষুধ চলে যাচ্ছে কালোবাজারে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা হাসপাতালের অনুকূলে সরকারের বরাদ্দ দেয়া ১৩ কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম না কিনে তা লুট করা হয়েছে। এসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান, স্টোর কিপার একে ফজলুল হক ও হিসাবরক্ষক আনোয়ার হোসেনের গ্রেফতার ও বিচার চাই আমরা।
বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দুদকসহ বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
আকরামুল ইসলাম/এএম/পিআর