ব্যাংকে বসেই প্রতারকের খপ্পরে, হাওয়া প্রায় লাখ টাকা
সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছেলে জাহিদুল ইসলামকে মালয়েশিয়া পাঠিয়েছেন বাবা আব্দুল মালেক। ঋণ পরিশোধ করার জন্য বাবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৯৪ হাজার ৮৪ টাকা পাঠিয়েছিলেন ছেলে।
ঝিনাইদহে বুধবার (১৭ এপ্রিল) সোনালী ব্যাংকের মহেশপুর শাখায় সেই টাকা তুলতে যান কোনোরকম স্বাক্ষর করতে পারা বাবা আব্দুল মালেক। তার লেখাপড়া না জানার এই সুযোগ নিয়ে টাকা উঠিয়ে চম্পট দিয়েছেন এক প্রতারক।
আব্দুল মালেক কিছু বুঝে উঠতে না পেরে এখন শুধু প্রতারকের সন্ধান পেতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন। ইতোমধ্যে ব্যাংকে থাকা সিসি ক্যামেরা থেকে প্রতারক চিহ্নিত করে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি। এখন তার একটাই প্রশ্ন ছেলেকে কী জবাব দেবেন?
জাগো নিউজকে আব্দুল মালেক বলেন, তিনি পড়ালেখা জানেন না। কৃষি কাজ করে সংসার চালান। মাত্র চার বিঘা চাষযোগ্য জমি আছে তার, যা চাষ করে সাতজনের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর। এ কারণে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আট মাস আগে ছেলে জাহিদুল ইসলামকে মালয়েশিয়া পাঠিয়েছি।
তিনি জানান, ছেলে বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এর আগে একবার ৩০ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এবার টাকার পরিমাণ বেশি হাওয়ায় ছেলে ব্যাংকে টাকা পাঠাবে বলে জানান। তাই ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা শহরে সোনালী ব্যাংক শাখায় নিজ নামে একটি অ্যাকাউন্ট খুলেন তিনি।
গতকাল বুধবার সকালে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে গিয়ে ব্যাংকে এক কর্মকর্তার কাছে একটি চেক দেন। ব্যাংক কর্মকর্তা চেকে একটি স্বাক্ষর নিয়ে আরেকজনকে দেখিয়ে দেন। এ সময় অপর কর্মকর্তার কাছে যাবার পথে অন্য একজন (প্রতারক) এসে চেকটি হাত থেকে নিয়ে ম্যানেজারের টেবিলে দেন। ব্যাংকের কর্মকর্তা ভেবে আব্দুল মালেক প্রতারকের কাছে চেকটি দেন।
সেই ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে ঘুরতে থাকেন আব্দুল মালেক। ব্যাংক ম্যানেজার চেকের ওপর স্বাক্ষর করে তার সামনেই প্রতারক ব্যক্তিটির হাতে চেকটি ফেরত দেন। প্রতারক ওই চেকটি ক্যাশে জমা দেন এবং বলেন দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে ব্যাংকের টাকা শেষ হয়ে গেছে। টাকা আনা হলে আপনার টাকা পাবেন। তার কথামতো অপেক্ষা করতে থাকেন আব্দুল মালেক। লোকটি ব্যাংকের মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। এভাবে আধা ঘণ্টা অপেক্ষার পর লোকটি সামনে থেকে হারিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে খোঁজ নিয়ে আব্দুল মালেক জানতে পারেন, চেকের ৯৪ হাজার ৮৪ টাকা তুলে নিয়ে পালিয়েছেন লোকটি।
এরপর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন আব্দুল মালেক।
এ ব্যাপরে মহেশপুর থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা এ এস আই সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, থানায় জিডি হয়েছে। ব্যাংকে থাকা সিসিটিভির ছবি দেখে প্রতারক শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/জেডএ/জেআইএম